ক্ষমতায় এসেই বাংলাকে নতুন করে সাজিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনেছিলেন বহু নতুন প্রকল্প। যার মধ্যে অন্যতম হল কন্যাশ্রী প্রকল্প। যে প্রকল্প মমতাকে পুরস্কৃত করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জে। বাংলার বহু মেয়ে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সপ্ন দেখেছিল এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এবার কন্যাশ্রীর টাকায় কলেজে ভর্তি হতে চলেছে উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী সংযুক্তা বোস।
দু’মাস আগেই কন্যাশ্রীর টাকা পেয়েছে এই কৃতী। সংযুক্তা জানিয়েছে, কন্যাশ্রীর টাকা দিয়ে কলেজে ভর্তি হবে সে এবং বইখাতা কিনবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রকল্প যে কিভাবে তাঁর মত বহু মেয়ের জীবন গড়ে দিয়েছে সেই কথাও বলেছে সংযুক্তা। অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে সে মমতাকে।
ছোটবেলা থেকেই অভাবের সঙ্গে লড়ে আজ এই সাফল্যের মুখোমুখি হয়েছে সংযুক্তা। সংযুক্তার দিদিমা সন্ধারানি সিংহের কথায়, ওকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি। ও সেটা বোঝে। ওর ভিতরে সেই কষ্ট ছিল। সেই জেদ থেকে ও এত ভালো ফল করেছে। সংযুক্তার মায়ের টিউশন ও ফ্ল্যাটের ভাড়ার টাকায় তাদের সংসার চলে। স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও বন্ধুদের সহযোগিতায় পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে সংযুক্তা। আগামী দিনে পড়ার খরচ জোগাতে আর্থিক সসমস্যাই ভাবিয়ে তুলেছে ওই পরিবারকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকাটাও খুব সাহায্য করেছে।
সংযুক্তা জানালেন, আমি অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সামনেই প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি পরীক্ষা দেব। এছাড়া দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্সেও ভর্তির চেষ্টা করব। আমাকে নিয়ে স্কুলের স্যার, ম্যাডামদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। শুনেছি আমাদের স্কুল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মেধা তালিকায় নাম ছিল। কিন্তু, তারপর হয়নি। সেজন্য সবার আশা বেশি ছিল। পড়াশোনা ছাড়া ছবি আঁকতে ভালো লাগে।
এদিন সকালে টেনশনে বাড়িতে টিভি খুলতে দেননি সংযুক্তা। বন্ধুর ফোনে পরীক্ষার ফল জানতে পেরে দিদাকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে কাঁদতে শুরু করেন। চৈতালিদেবী জানালেন, সংযুক্তার অর্থনীতি নিয়ে দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্সে পড়ার ইচ্ছা। কিন্তু, সেই টাকা আমরা বহন করতে পারব না। তাই কলকাতাতেই পড়বে। সংযুক্তা উচ্চ মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষায় ৪৭১ নম্বর পেয়েছিলেন। মূল পরীক্ষায় আরও ভালো ফল করলেন।