বেজে উঠেছে বিশ্বকাপের দামামা। ভারতের প্রথম ম্যাচ ৫ জুন। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। পরের ম্যাচে কোহলি বাহিনী ৯ জুন খেলবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। ১৩ জুন ভারতের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। গত বিশ্বকাপে কিউয়িরা ফাইনালে খেলেছিল। আর যে ম্যাচ ঘিরে গোটা বিশ্ব প্রতীক্ষার প্রহর গুণছে, সেই ভারত-পাকিস্তান হাইভোল্টেজ লড়াই হবে ১৬ জুন। অর্থাৎ বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচেই ভারতকে কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইংল্যান্ড উড়ে যাওয়ার আগে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানালেন, এবারের বিশ্বকাপের লড়াই সবচেয়ে কঠিন।
তবে কোহলি আত্মবিশ্বাসী। তিনি আরও জানালেন, “আমরা ব্যালান্সড এবং আত্মবিশ্বাসী মন নিয়েই বিশ্বকাপে যাচ্ছি। আইপিএলে আমাদের সবাই খুব ভালো ফর্মে ছিল। পিচ হয়তো ফ্ল্যাট হবে। কিন্তু বেশ কিছু ২৬০-২৭০ রানের ম্যাচও হবে। যেখানে টিমকে সেটা ডিফেন্ডও করতে হতে পারে। মোট কথা, বিশ্বকাপে সবরকম পরিস্থিতির জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। আমরা যদি নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী খেলতে পারি, ভালো কিছুই প্রত্যাসিত। পিচ ফ্ল্যাট হতে পারে। আপনাকে সব কিছুর জন্য তৈরি থাকতে হবে। তবে আমাদের টিম যথেষ্ট অভিজ্ঞ। প্রতিটা প্লেয়ার একে অপরের পরিপূরক”।
প্রথম চারটি ম্যাচেই ভারতের লড়াই কঠিন হলেও বিরাট কোহলি ভালো ফলের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি জানিয়েছেন, ‘দলের মনোবল তুঙ্গে। বিশ্বকাপ এমন একটা টুর্নামেন্ট,যার জন্য চার বছর অপেক্ষা করতে হয়। আমার মনে হয়, যারা বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছে তারা একশো শতাংশ উজাড় করে দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে তৈরি। যখনই মাঠে নামার সুযোগ পাবো আমরা, তখনই একশো শতাংশ মেলে ধরার চেষ্টা করব। এটাই আমাদের মিশন। ৩০ মে বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে। আমাদের প্রথম ম্যাচ ৫ জুন। হাতে অনেকটা সময় থাকছে ঠিকই, তবে সেটাকে প্রস্তুতির জন্য কাজে লাগাতে হবে। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। লা লিগা কিংবা প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলি কিন্তু তিন-চার মাস ধরে একই গতিতে খেলার চেষ্টা করে। তাহলে আমরা পারব না কেন? আমরা যখনই শুরু করি, আমাদের লক্ষ্য থাকবে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। দেড় মাস ধরে বিশ্বকাপ চলবে।লম্বা টুর্নামেন্টে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। সেগুলিকে কাটিয়ে উঠে সাফল্য তুলে আনাটাই হবে আসল কাজ।’
দ্বাদশ আইপিএলে ব্যর্থ ভারতীয় দলের একনম্বর স্পিনার কুলদীপ যাদব। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে চায়নাম্যান বোলারটি মাত্র চারটি উইকেট পেয়েছিলেন। পরের দিকে তাঁকে ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছিল। আইপিএলের ব্যর্থতা কুলদীপের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে। আর এক স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে বেশ ভালোই বল করেছিলেন। তবে আরসিবি সাফল্য পায়নি। তা সত্ত্বেও ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি বলছেন, ‘ভারতীয় দলের বোলিং আক্রমণের দুই স্তম্ভ কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল। আমরা দেখেছি কুলদীপ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কত ভালো সাফল্য পেয়েছে। তবে প্রত্যেকেরই খারাপ সময় যায়। এটা বরং ভালো যে কুলদীপের খারাপ সময়টা বিশ্বকাপে না হয়ে আইপিএলে গিয়েছে। আমার বিশ্বাস, ভুল শুধরে কুলদীপ বিশ্বকাপে দারুণ কামব্যাক করবে। যুজবেন্দ্র চাহালের দক্ষতা নিয়ে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী। ওরা আমাদের বোলিংয়ের দুই স্তম্ভ।’ ২০১৭ থেকে এক সঙ্গে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছেন কুলদীব ও চাহাল। ৪১টি ম্যাচে চাহালের সংগ্রহ ৭২টি উইকেট। ৪৪টি ম্যাচে কুলদীপ নিয়েছেন ৮৭টি উইকেট। দুই রিস্ট স্পিনার ছাড়াও ভারতীয় বোলিং আছেন ইয়র্কার স্পেশালিস্ট যশপ্রীত বুমরাহ, ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট পেসার মহম্মদ সামি ও স্যুইং মাস্টার ভুবনেশ্বর কুমার।