ভোট মিটতেই রবিবার বিজেপির একাধিক ‘পেইড’ মিডিয়া তাদের বুথ ফেরত সমীক্ষায় জানায় যে, তৃণমূলের কয়েকজন প্রার্থী জেতার জায়গায় নেই। বরং বাংলায় একাধিক আসন পেতে চলেছে বিজেপি। তবে ওই সকল বুথ ফেরত সমীক্ষাকেই উড়িয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সকল এগজিট পোলের ফল উড়িয়ে দিয়ে তাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেন তৃণমূল নেত্রী। এবং সেইসঙ্গে ইভিএম বদল নিয়েও দলীয় কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
সেই নির্দেশ মতই ২৩ তারিখ গণনা কেন্দ্রগুলিতে অভিজ্ঞ ও সেরা কর্মীদের টিম কাজে লাগানোর পরিকল্পনায় ব্যস্ত তৃণমূল। জানা গেছে, ভিভিপ্যাট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকও সেরে নিচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। গণনার আগে এগজিট পোলের ফল যাতে কোনও ভাবেই কর্মীদের মনোবলে চিড় ধরাতে না পারে, তা-ও নিশ্চিত করতে চেয়েছে তৃণমূল। দলের নিজস্ব অঙ্কের সঙ্গে যে বুথ ফেরত সমীক্ষার মিল নেই, সেই বার্তাই স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূলের যাবতীয় প্রতিক্রিয়ায়। যেমন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বলেন, ‘বিজেপি একা কোনও মতেই ১২০ থেকে ১৩০-টির বেশি আসন পাবে না।’
অন্যদিকে, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘রাজ্যের ক্ষেত্রে এই এগজিট পোল মিলবে না। বনগাঁ লোকসভার চারটি বিধানসভায় আমাদের লড়াই বিজেপির সঙ্গে, বাকি তিনটেয় লড়তে হয়েছে সিপিএমের সঙ্গে। কমন ফ্যাক্টর কিন্তু আমরাই। সিট বের করবে কী করে ওরা?’ আবার অভিজ্ঞ সংগঠক তথা নদিয়া জেলার সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের ব্যাখ্যা, ‘সব এগজিট পোল যদি ধ্রুব সত্য হবে, তাহলে তো পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা খরচ করে আসল পোল করানোরই প্রয়োজন হত না।’
উল্লেখ্য, নিজের এলাকায় দলকে জেতাতে পারলে তবেই দলের থেকে ভবিষ্যতে কিছু আশা করবেন, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে কাউন্সিলরদের এমনই বার্তা দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। সেই বার্তার পরে প্রায় দেড় মাস ধরে এলাকায় পড়ে থেকেছেন কলকাতা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের (পাইকপাড়া) কাউন্সিলর গৌতম হালদার। ওই ওয়ার্ডে ৩৩ হাজার ভোটার। ভোট পড়েছে ২২৫৮৭টি। গৌতমের বক্তব্য, ‘টেনশন ফ্রি। গত লোকসভায় ২৪০০ ভোটে লিড দিয়েছিলাম। এবার সংখ্যাটা দ্বিগুণ হবে।’
১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য রাউতের দাবি, ‘আমার ওয়ার্ড থেকে দলের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।’ দক্ষিণ দমদমের লেকটাউন এলাকার কাউন্সিলর মানসরঞ্জন রায় ৬০০ ভোটে লিড দিয়েছিলেন দলকে। এ বারও নিজের গড় ধরে রাখার ব্যাপারে প্রত্যয়ী তিনি। দমদমের কাউন্সিলর উত্তম রায়চৌধুরীর দাবি, ‘এক ভোটে হলেও সৌগত রায় আমার ওয়ার্ড থেকে জয়ী হবেন।’ এমনই আত্মবিশ্বাসের সুর ঘাসফুল শিবিরের প্রতিটি নেতা-মন্ত্রীর গলাতেই।