ভোট একদম শেষ দফার আগে আবারও প্রকাশ্যে চলে এল মোদী সরকারের ‘ভাঁওতাবাজি’। ফাঁস হল বিজেপির ফাঁকা বাগাড়ম্বর। তাও আবার বিজেশি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। এবারের লোকসভা ভোটের আগে থেকেই তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি মোদীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলছিল যে তিনি কৃষকদের দুরবস্থা নিয়ে আদৌ চিন্তিত নন। সেই অভিযোগ খন্ডনের চেষ্টায় আদর্শ নির্বাচনীবিধি লাগু হওয়ার পূর্বেই তড়িঘড়ি ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই যোজনার আওতায় কেন্দ্রের তরফে প্রত্যেক কৃষকের অ্যাকাউন্টে ২০০০ টাকা দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু উত্তর প্রদেশের আঞ্চলিক দৈনিকগুলির সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের বহু অঞ্চলের কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার ওই ২০০০ টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে। অথচ তাঁরা কেউই ওই টাকা নিজেরা ব্যাঙ্ক থেকে তোলেননি। তাঁদের অভিযোগ, ব্যাঙ্ক থেকে প্রয়োজনে টাকা তুলতে গেলে ম্যানেজাররা তাঁদের জানান, ওই যোজনায় তাঁদের অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা নেই। যে সব এলাকার কৃষকরা এই অভিযোগ করেছেন, তার মধ্যে আছেন মুজাফফরনগর এবং ফইরোজাবাদের কৃষকরা।
পুরো ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ রাজ্য কৃষক সংগঠনের অভিযোগ, কৃষকদের সঙ্গে আবারও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বিজেপি সরকার। দরিদ্র কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণার ফল বিজেপিকে ভুগতে হবে বলেও সতর্ক করেছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, মোদী জমানায় রাতের অন্ধকার নেমে এসেছে কৃষকদের জীবনে। শুধু তাই নয়, ‘আচ্ছে দিনে’ বলি হয়েছেন দেশের অন্নদাতারা। যেমন সম্প্রতি উত্তর মহারাষ্ট্রের বাগলান তালুকে ৪৪ বছর বয়সি চাষি তাতিয়াভাউ খেরনার তাঁর পেঁয়াজ ক্ষেতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁর আত্মীয়েরা দাবি করেছিলেন, ৫০০ কুইন্টাল পেঁয়াজ মজুত রেখেও বিক্রি করতে না পারায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
আবার ওই একই সময়ই আত্মঘাতী হওয়া ৩৩ বছর বয়সি মনোজ ধনদাগের মৃত্যুর পিছনে কারণও এক। মনোজও নিজের ক্ষেতে বসেই বিষ খান। পরে মৃত্যু হয় তাঁর। মোদী সরকারের ৫ বছরের সালতামামি ঘাটলে দেখা যাবে এমনই অনেক কৃষকমৃত্যু বা আত্মহত্যার ঘটনার ছবি। তথ্য বলছে, প্রতিদিনই আত্মহত্যা করছেন গড়ে ৩৫ থেকে ৩৮ জন কৃষক। ফলে ভোট মরশুমে এই কৃষক আত্মহত্যার ইস্যু এবং তাঁদের ক্ষোভ এড়াতেই প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার নামে কৃষকদের ভাঁওতা দিয়েছিল বিজেপি সরকার। ভোট ফুরনোর কালে এবার যা প্রকাশ্যে চলে এল।