যে কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদের মুখ শাঁওলী মিত্র। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বামপন্থীদের নানা অন্যায় তিনি মেনে নিতে পারেননি। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন শাঁওলী মিত্র। সেই সময় সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে শাসক দলের অত্যাচার সারা বাংলায় নিন্দিত হয়েছিল। এবার বিজেপির এই নিন্দনীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলে তিনি জানিয়ে দিলেন, ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়ার অন্যতম মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চলতি নির্বাচনে তিনি বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি স্পষ্টতই মনে করেন এই মুহূর্তে মমতাই ভারতবর্ষকে নেতৃতে দেওয়ার যোগ্যতম মুখ। শাঁওলীর মতে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা বাংলাকে, ভারতবর্ষকে সাম্প্রদায়িকতার হাত থেকে বাঁচাতে প্রায় একক ভাবে প্রতিবাদ করে চলেছেন। ভারতবর্ষকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি তাঁর পাশে আছি। যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে দলিতদের, যেভাবে মুসলমানদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে– সেটা গর্হিত অন্যায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে লড়াইটা লড়ছেন তাঁর জন্য আমি তাঁকে সমর্থন করি।”
সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামে বাম সরকারের অত্যাচারের সেই কালো অধ্যায় নিয়ে যখন গোটা বাংলার মানুষ সরব হয়েছিলেন তখন সেই প্রতিবাদের প্রথম সারিতেই ছিলেন শাঁওলী। তখনকার রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী যাকে ‘হাড় হিম করা সময়’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। সেই কালো দিনগুলোতে তিনি সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন। শুধু শাঁওলী মিত্র নন, ওই সময় নন্দীগ্রামে ছুটে গিয়েছিলেন আরও অনেকে। অপর্ণা সেন, জয় গোস্বামী, কৌশিক সেন-সহ আরও অনেকেই সেই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কঠোর নিন্দায় সরব হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “সেই সময় পর পর কয়েকবার গিয়েছিলাম নন্দীগ্রামে। সেখানকার মানুষেরা এখন ভালো আছেন। তখন ভয়াবহ সময় ছিল। নিজের চোখে দেখেছি। এমনকী দুষ্কৃতীরা আমাদের উপরে চড়াও হয়েছিল। আজ শুভ পরিবর্তন ঘটেছে বলে আনন্দ হয়।”
সেখানকার মানুষ ভালো থাকলেও শাঁওলী মিত্রের কাছে ১৪ মার্চ কালো দিন হিসেবে চিহ্ণিত হতে থাকবে চিরকাল। এ ব্যাপারে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “১৪ মার্চ আমার কাছে একটা ‘কালো দিন’ হিসাবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ২০০৭-এর ২১ মার্চ আমরা কয়েকজন গিয়েছিলাম নন্দীগ্রামে, সেখানকার মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। প্রচুর সভা করেছি সেখানে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে উত্তর জানতে চেয়ে আমরা একটা চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও উত্তর পাইনি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আমাদের সঙ্গে দেখাও করেননি। পরে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। নন্দীগ্রামের মানুষদের জন্য সেই সময়ের বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা কোনও দিন ভোলার নয়।”