লোকসভা নির্বাচনে প্রচারে মোদী বারবার ধর্মকে টেনে এনেছেন। সাম্প্রদায়িকতাকে হাতিয়ার করেছেন। এইবার সেই নিয়ে মুখ খুললেন টলিউডের অন্যতম অভিনেতা-পরিচালক অরিন্দম শীল। তিনি মনে করেন, ‘দেশবাসী হিসেবে আমাদের অত্যন্ত লজ্জা যে, আজ স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে আমাদের কথা বলতে হয়। সাম্প্রদায়িকতা রোখার জন্য সাধারণ মানুষের কছে আবেদন জানাতে হয়। এমন একটা ভয়ঙ্কর সময় যে আসবে, তার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। ২০১৯ সালে দাঁড়িয়ে ভারতবর্ষ কোথাও এগিয়ে যাচ্ছে না। ভারতবর্ষ ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। ভারতবর্ষকে খণ্ড খণ্ড করছেন নরেন্দ্র মোদী। আত্মপিপাসার জন্য তিনি আমাদের দেশকে খণ্ড খণ্ড করছেন।’
অরিন্দমের কথায়, ‘এতই কঠিন সময় যে, মানুষের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। ভারতবর্ষের এতদিনকার ঐতিহ্যে এমনটা দেখা যায়নি। ১৯৪৭ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও নির্বাচন হয়নি যেখানে একমাত্র ইস্যু সাম্প্রদায়িকতা। গত পাঁচ বছর ধরে কোথায় ছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ? তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের দিকে ফিরেও তাকাননি। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা দেনা নিয়ে দিদি হাসি মুখে কাজ করেছেন। এই পশ্চিমবঙ্গকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে গেলে অবাক হতে হয়। আমরা দেখেছি কীভাবে বদলে গিয়েছে কলকাতা, কীভাবে বদলে পশ্চিমবঙ্গ।’
শুধু মোদীর বিরোধীতাই নয়। সঙ্গে সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদায়িকতার বিরুদ্ধে শুরু থেকে কাজ করে করছেন। গ্রামে গঞ্জে ঘুরে মানুষের কাছে গিয়ে কাজ করেছেন। আর নরেন্দ্র মোদী ভোট চাইতে এসে দরদ দেখান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সাল থেকে মানুষের জন্য কাজ করছেন। সে জন্যই ওনার পাশ আছি। সারা ভারতে মমতাই একমাত্র শক্তি, যিনি সমস্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে কঠিন ভাবে দাঁড়াতে পারেন। অশুভ শক্তি যখন বিরাট অসুরের মতো আকার নেয়, তখন দুর্গার দরকার হয়। সেই দুর্গার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
অরিন্দম বিশ্বাস করেন একদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হার ধরে ভারতবর্ষ বিজেপিমুক্ত হবে। এ জন্য তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আবেদনও করেছেন এই বলে ‘এই মুহূর্তে তৃণমূলকে বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে সমর্থন করাটা বড় কথা নয়। নরেন্দ্র মোদীকে ভারতবর্ষের গদি থেকে নামিয়ে আনাটাই প্রধান কাজ বলে মনে করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হবেন কিনা সেটা বড় কথা নয়। মোদী এবং বিজেপি ভারতবর্ষ থেকে মুছে যাক এটাই ভারতবর্ষের মানুষের মুখ্য চিন্তা হওয়া উচিৎ।’