সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন একেবারে শেষ লগ্নে। তবে শেষ পর্বের ভোট প্রচারেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধতে ছাড়েননি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। এবার পাঞ্জাবের বারগারিতে দাঁড়িয়ে মোদীকে আক্রমণ করে রাহুল বলেন, মোদী ভাবছেন, একা উনিই দেশ চালাতে পারেন। পাশাপাশি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে নিয়ে মোদীর ব্যঙ্গ করার প্রসঙ্গ টেনে রাহুলের দাবি, এনডিএ সরকারের পাঁচ বছর কেটে যাওয়ার পরে এখন মোদীর দিকে তাকিয়েই গোটা দেশ হাসছে।
কংগ্রেস সভাপতি গতকাল পাঞ্জাবের ফরিদকোট ও লুধিয়ানা জেলায় দুটি জনসভা করেন। ফরিদকোটের বারগারিতে রাহুলের নিশানায় ছিলেন মোদী। রাহুল বলেন, ‘মোদী ভাবছেন, একজনই খালি দেশ চালাতে পারে। তবে দেশ চালানোর আসল মালিক জনতা।’ ইউপিএ সরকারের সঙ্গে মোদী জমানার তুলনাও টানেন কংগ্রেস সভাপতি। বলেন, ‘মনমোহন সিংকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করতেন মোদী। কিন্তু পাঁচ বছর পরে উনি আর মনমোহনকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেন না। কারণ দেশের মানুষ এখন তাঁকে দেখেই হাসে।’
রাহুল এই অভিযোগও করেন যে, নোটবন্দী আর জিএসটির মতো সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন মোদী। তিনি যদি এ ব্যাপারে মনমোহনের পরামর্শ নিতেন, তা হলে ওই দু’টি ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত থেকে দেশ বাঁচতে পারতো। এই দুই সিদ্ধান্ত দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে নেতিবাচক ছাপ ফেলতে পারে বলে মনমোহন যে ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন এবং তা যে অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে, তা-ও দাবি করেন রাহুল।
কংগ্রেস জমানায় দেশের অর্থনীতিতে ঘুমন্ত হাতির সঙ্গে তুলনা করেছেন মোদী। সে প্রসঙ্গ টেনে আজ রাহুল পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, যখন পাঞ্জাবের চাষিরা কঠোর পরিশ্রম করে সবুজ বিপ্লব এনেছিলেন, সে সময়ে কোথায় ছিলেন মোদী? ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে মোদীর দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি আজও বাস্তবায়িত হয়নি বলেই অভিযোগ আনেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজের টুইটারে ‘মোদীলাই’ বলে ইংরেজি অভিধানের একটি নতুন শব্দের খোঁজও দিয়েছেন রাহুল।
তবে শুধু খোঁজ দিয়েই থেমে থাকেননি তিনি। শব্দার্থের স্ন্যাপশটটিও দিয়ে দিয়েছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে ‘মোদীলাই’ শব্দের তিনটি অর্থ। এক, ক্রমাগত সত্যকে পরিবর্তন করা। দুই, সহজাত ও স্বাভাবিক প্রবণতায় মিথ্যে বলা। তিন, কোনও বিরতি ছাড়াই মিথ্যে বলে যাওয়া! এরপরে রাহুল যদিও আর কিছু বলেননি, তবে তিনি যা বোঝাতে চেয়েছেন, তা বুঝে গিয়েছেন মানুষ। যা নিয়ে হাসির রোলও দেখা গিয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে।