উত্তর কলকাতা তাঁকে একডাকে চেনে। এলাকার যে কোনও সমস্যায় তিনি মানুষের পাশে থাকেন। তিনি সকলের সুদীপদা। উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়সকে উপেক্ষা করেই যিনি দিনরাত এক করে প্রচার চালাচ্ছেন। আগামী ১৯ তারিখ শেষ দফার নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলবে উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে। ৭ জন বিধায়ক এবং ৫৩ জন কাউন্সিলর সুদীপকে জেতানোর লড়াইতে নেমেছেন।
কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভা। এগুলি হল চৌরঙ্গী, এন্টালি, বেলেঘাটা, জোড়াসাঁকো, মানিকতলা, শ্যামপুকুর এবং কাশীপুর-বেলগাছিয়া। এই সবকটিই তৃণমূলের দখলে। এখানকার কর্মীরা প্রথম দিন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সুদীপের জন্যে। মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, “সুদীপদা এবারেও জিতবেন। কলকাতা উত্তরে অনেক অবাঙালি এবং সংখ্যালঘুদের ভোট রয়েছে। অবাঙালিদের মধ্যে যারা ব্যবসা করেন তাঁরা মোদীর ওপরে ভীষণ বিরক্ত। নোটবন্দীর ফলে এদের ব্যবসার বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল এরা কেউই তাই বিজেপিকে ভোট দেবেন না”।
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, “ জনসংযোগে সুদীপদা সকলের থেকে এগিয়ে। চৌরঙ্গীতে নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনেক কাজ করেছেন। চিৎপুরের ব্যবসায়ীরা নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারেন। তাঁদের মধ্যে উচ্ছ্বাস সুদীপদা প্রার্থী হওয়াতে। ওনারা সকলেই তৃণমূলের সঙ্গে আছেন”।
বিধায়ক স্মিতা বক্সী, সঞ্জয় বক্সী ও যুবনেতা সৌম্য বক্সী উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার করছেন। রাজ্যসভার সদস্য শান্তনু সেন তিনিও সুদীপকে জেতাতে দিনভর এলাকায় কাজ করছেন। সুদীপ বলেন, “আমরা সবসময়ে মানুষের সঙ্গে থাকি। দিল্লীতে অধিবেশন শেষ হলেই কলকাতায় চলে এসে কাজ শুরু করে দিই। মমতা বাংলায় যে উন্নয়ন করেছেন তার ভিত্তিতেই তো ভোট হচ্ছে”।
সুদীপ যেখানেই প্রচারে যাচ্ছেন বিপুল সাড়া পাচ্ছেন। গত রবিবার মানিকতলা মেন রোডের উপর হুডখোলা গাড়িতে দাঁড়িয়েছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। গাড়ির সামনে তখন হাজারখানেক মানুষের লাইন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের হাতে আবার বেলুনের গুচ্ছ। ম্যাটাডোরের উপর চাপানো খানকয়েক পেল্লায় লাউড স্পিকারে তীব্র আওয়াজে গান বাজছে। ভোটের গান। মুঠো মুঠো ফুল উড়ে আসছিল সুদীপবাবুর গায়ে। গাঁদা, রজনীগন্ধার সঙ্গে দোপাটির পাপড়ি। সেই শোভাযাত্রার মাঝেই কেউ একজন আচমকাই একটা মাউথপিস এগিয়ে দিল সুদীপবাবুর দিকে। মাইকে ফুঁ দিতেই গমগম করে উঠল চারদিক। তিনি বললেন, এ তো দেখি ভোটের প্রচার নয়। মনে হচ্ছে বিজয় মিছিলের মুড। সারি সারি মাথা, তাদের কোলাহল, রাস্তার ধার ঘেঁষে উলুধ্বনি, শাঁখের আওয়াজ আর রেকাবে চন্দন সাজিয়ে পাড়াতুতো মহিলাদের সুদীপ-বন্দনায় সত্যিই যেন জয়ের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ছিল চারদিকে। প্রচারের প্রথম দিন থেকেই এইরকমই জনসমর্থনে ভেসেছেন সুদীপ।