বিদ্যাসাগর কলেজ যেন রণক্ষেত্র। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শা-র রোড শোয়ের পরে কলেজের ভিতরে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়। চলে তাণ্ডব। ঘটনা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার রাতেই কলেজে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তিনি বলেন, ‘বিজেপির কাজে আমরা লজ্জিত৷ যারা মনীষীদের সম্মান দিতে পারে না, তারা দেশের দায়িত্ব কী করে নেবে!’

সংঘর্ষে ভেঙে যাওয়া বিদ্যাসাগরের মূর্তির অংশ হাতে নিয়ে দেখেন মমতা৷ কথা বলেন কলেজের অধ্যাপকদের সঙ্গে৷ খুঁটিয়ে দেখেন কলেজের ভেঙে যাওয়া বিভিন্ন সম্পত্তি৷ তারপর ঘটনাস্থলেই সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির এই কাজে আমরা লজ্জিত, আমরা দুঃখিত। ওদের হয়ে আমরা ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে। ইউপি-দিল্লীর গুন্ডারা জানে না, বিদ্যাসাগর কে। যারা মিছিলের নামে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে, বিদ্যাসাগর কলেজের গেট ভাঙে, তাদের কোনও ক্ষমা আছে? দিল্লীর গুন্ডা নেতারা আমাদের হেরিটেজকে অপদস্থ করল। আমার বাংলার সংস্কৃতির গায়ে হাত দিলে আমার থেকে ভয়ংকর কেউ হবে না।’

বিজেপিকে তীব্র শ্লেষের সঙ্গে বিঁধে মমতা বলেন, ‘অনেক মিছিল করেছে তৃণমূল। কখনও এমন ঘটেনি। বাইরে থেকে গুন্ডা এনে এমন ভাঙচুর বাংলার মানুষ সহ্য করবে না। কাল আমার মিছিল আছে। সেটারই আগে ইচ্ছাকৃত ভাবে, বেআইনি ভাবে এটা করল ওরা। ধিক্কার ও ঘৃণা রইল। আমরা তদন্ত করে দেখব। আমার নিন্দের ভাষা নেই। বাংলার মানুষ হয়ে আমরা বিদ্যাসাগরকে বাঁচাতে পারলাম না! যারা মনীষীদের সম্মান দিতে পারে না, তারা দেশের দায়িত্ব নেবে! ওদের টাকার অহঙ্কার হয়েছে। কোটি টাকা দিয়ে গুন্ডা এনে বসিয়ে রেখেছে। নোটবন্দীর টাকা ছড়াচ্ছে ওরা। ওরা নির্বাচন কমিশনের রীতি ভাঙছে।’
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পুলিশ কমিশনার রাজেশ কুমার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগেই পৌঁছেছিলেন বিদ্যাসাগর কলেজে। তিনি বলেন, ‘বিজেপির এই আচরণে আমরা লজ্জিত। এর কোনও ক্ষমা নেই।’ অন্যদিকে এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের ছাড়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার রাজেশ কুমার। ইতিমধ্যেই ১০০-রও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।