সিনেমাতে দেখা যেত, মুম্বাইয়ের ডন দাউদ ইব্রাহিম গ্যালারিতে বসে ক্রিকেট খেলাতে বেটিং চক্র চালাচ্ছে। কিন্তু তা ছিল ৮০’র দশক। তারপর থেকে যত দিন গড়িয়েছে, ততই এই বেটিংয়েও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কিন্তু গোটা বিষয়টিই যে অবৈধ তা অনেকেই ভুলে গিয়েছেন। এখানে আর প্লেয়ারদের সরাসরি ভাবে টাকা দিচ্ছেন না লগ্নিকারী ব্যক্তি। তবে কি প্লেয়াররা টাকা পাচ্ছেন না? এটা বড় প্রশ্ন। আইসিসি অবশ্য এই ধরণের বেটিংয়ের উপরে নজরদারি চালাচ্ছে বলে দাবি করে। কিন্তু আইপিএলে যেভাবে বেটিংয়ে প্রবেশ করার মূল্য নির্ধারিত করা হয়েছে তাতে স্কুল কলেজের পড়ুয়ারাও খুব সহজেই বেটিংয়ের মত ব্যবসাতে হাত পাকিয়ে ফেলেছে।
কোথায় হচ্ছে এই বেটিং? তার জন্য ইন্টারনেট খুললে দেখা যায় কয়েক লক্ষ ওয়েবসাইট আছে। যার মধ্যে ড্রিম১১.কম, বেটওয়ে. কম, বেট৩৬৫.কম, ২৪×৭বেট.কম সহ আরও অজস্র সাইট পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মধ্যে ড্রিম১১.কম বলে যে সাইটটি আছে তার প্রচলন সব থেকে বেশি। এখানেই দেখা যায় ২৬ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত প্রবেশমূল্য নির্ধারিত করা হয়েছে। এখানে কি ভাবে খেলা হয়? জানা গিয়েছে, আইপিএলের ক্রীড়াসুচি অনুযায়ী যে খেলাগুলি নির্ধারিত করা হয়েছে সেখানে দুটি টিমের খেলোয়াড়দের উপরে পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। তবে এই পয়েন্টগুলি ওই ওয়েব সাইটেই দেওয়া আছে। কিন্তু কে ঠিক করল এই পয়েন্ট তা নিয়ে আছে প্রশ্ন।
এবারে দেখে নেয়া যাক কিভাবে খেলা হচ্ছে । প্রথমে দুটি টিমের মধ্যে থেকে ১১ জন কে নিজের পছন্দ মতন করে বেছে নেবে। একটি টিমের থেকে ৭ জনের বেশি নেওয়া যাবে না। তারপর ওই ১১ জনের মধ্যে দুজনকে ক্যাপ্টেন ও ভাইস-ক্যাপ্টেন হিসাবে বেছে নেবে। অংশগ্রহণকারীর বেছে নেওয়া ক্যাপ্টেন যদি রান পায় তাহলে পয়েন্ট অনুযায়ী ওই খেলোয়াড়ের যে পয়েন্ট নির্ধারিত করা হয়েছিল তার দ্বিগুন পয়েন্ট সংগ্রহ করা যাবে। আর ভাইস-ক্যাপ্টেনের ক্ষেত্রে দেড়গুন পয়েন্ট। এরপর যে খেলোয়াড়দের বেছে নেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ব্যাটসম্যান হলে তার রানের উপরে পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারবে ওই বেটিংয়ে অংশগ্রহণকারী। আর বোলার হলে তার উইকেট নেওয়ার উপরে এবং রান কম দেওয়ার উপরে বেটিং পয়েন্ট নির্ধারিত করবে ওয়েবসাইট সংস্থা। এই ভাবে গোটা খেলাতে অংশগ্রহণকারী তাদের পছন্দের দলের খেলোয়াড়দের দ্বারা যে পয়েন্ট সংগ্রহ করছে তা উপরে সে জিতবে ওই প্রাইজ মানি। কিন্তু কিভাবে এই প্রাইজ মানি আয় করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, অংশগ্রহণকারীরা যে প্রবেশমূল্য দিচ্ছে তার থেকেই প্রাইজ মানি দেওয়া হচ্ছে।
এই বেটিংয়ের নেশায় পড়ে যাচ্ছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও। আজকাল সবার হাতে স্মার্টফোন হয়ে যাওয়ার ফলে তারা এই বেটিংএর এপ্লিকেশন সরাসরি ফোনে ডাউনলোড করে নিচ্ছে। এবং ইন্টারনেটর মাধ্যমে তারা সেখান থেকেই পয়সা লাগাচ্ছে ম্যাচ পিছু।