গঙ্গার দূষণ রোধ করবার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গঙ্গাকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্প। হাজার প্রকল্প নেওয়া হলেও মোদী সরকার পরিবেশ দূষণরোধে তেমন কোনো ইতিবাচক কাজ করে উঠতে পারেনি। ভোট চাইতে ব্যস্ত মোদী হাজার চেষ্ঠার পরও পরিবেশ দূষণ কমাতে উদ্যোগী নন। তাই ভারতে নদী দূষণও কমছে না। নদী দ্বারা বাহিত হয়ে নানা বর্জ্য জমা হচ্ছে সাগরে। যার মধ্যে অন্যতম প্লাস্টিক। গোটা বিশ্বে প্রতি বছর ৯ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক জমা হচ্ছে সমুদ্রে। এরফলে সমুদ্রের জল দূষিত হচ্ছে, বিপন্ন হচ্ছে সামুদ্রিক প্রাণী। ফলে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হচ্ছে।
এই সমস্যা কেবল ভারতের নয়। এই সমস্যা গোটা বিশ্বের। আর এবার এই বিষয় খতিয়ে দেখতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একটি সমীক্ষা অভিযান করতে চলেছে। পদ্মা নদী ধরে বঙ্গোপসাগরে এসে এই অভিযান শেষ হবে হিমালয়ে, গঙ্গায়। পোশাকি নাম ‘সি টু সোর্স গ্যাঞ্জেস’। অভিযানের সদস্যরা সকলেই মহিলা। সহযোগিতায় ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (ডব্লুআইআই), ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা এবং ওয়াইল্ড টিম। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা, ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটার, ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়া, ওয়াইল্ড টিম, ইউনিভার্সিটি অফ প্লাইমাউথ, ডব্লুআইআই, জুলজিকাল সোসাইটি অফ লন্ডন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
এই সমীক্ষার উদ্দেশ্য, ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া এই চারপাশের বর্জ্য প্লাস্টিক কীভাবে সমুদ্রে পৌঁছে জমা হচ্ছে এবং কী তার ফল সেটি বোঝা এবং এ সম্পর্কে তথ্য তৈরি করা। উল্লেখ্য, নদী নিয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ‘প্ল্যানেট অর প্লাস্টিক’–এর যে বিভিন্ন সমীক্ষা চলছে তার মধ্যে প্রথম এই ধরনের সমীক্ষা করছে তারা। যাতে এর পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়। বসন্তের পর বর্ষার শেষেও ফের এই অভিযান করা হবে। এ বিষয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির পক্ষে ভ্যালেরি ক্রেইগ জানিয়েছেন, “প্লাস্টিক বর্জ্যের সমাধানের জন্য তাঁরা আন্তরিকভাবে সক্রিয়। এই সমীক্ষার মাধ্যমে গোটা বিশ্বে যাঁরা বিশেষজ্ঞ তাঁদেরকে এই সমস্যা সমাধানে কাজে লাগানোর একটা বড় সুযোগ থাকছে। বিশেষত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অঙ্কের সঙ্গে যুক্ত মহিলারা এগিয়ে আসছেন এটা বোঝাতে যে কীভাবে প্লাস্টিক জলের সঙ্গে ভেসে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে এবং এর সমাধান কীভাবে হবে”।
সমীক্ষায় প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে তিনভাবে কাজ করা হবে। জমি, জল এবং জনগণ। যে দলটি জমি সংক্রান্ত বিষয়টি দেখবে তাঁরা প্লাস্টিকের ব্যবহার এবং বর্জ্য সংগ্রহ থেকে সমাধান এবং কী ধরনের প্লাস্টিক চারপাশে আছে এবং তার পরিমাণ কতটা, সেগুলি সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করবে। বাতাস এবং জল ও নদীতে বিভিন্ন প্রাণীদের ওপর প্লাস্টিকের দূষণ নিয়ে কাজ করবে আরেকটি দল। অভিযানটি যে পথে হবে সেই পথের পাশে বসবাসকারী বাসিন্দারা কীভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য সামাল দিচ্ছেন এবং এর দূষণ সম্পর্কে কতটা সচেতন সে বিষয়টি ছাড়াও স্থানীয় স্তরে কীভাবে এর সমাধান করা হচ্ছে, সে বিষয় খতিয়ে দেখবে।