দ্বাদশ আইপিএলের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসকে ১ রানে হারিয়ে চতুর্থবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে নজির গড়ল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
জয়ের জন্য ১৫০ রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাই ৯ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৭০ রান তুলে ফেলেছিল। কিন্তু তার পরেই ম্যাচে নাটকীয় পটপরিবর্তন ঘটে। একে একে ফিরে যান সুরেশ রায়না (৮), অম্বাতি রায়াডু (১)। তা সত্ত্বেও আশা ছাড়েননি সিএসকে’র সমর্থকরা। মহেন্দ্র সিং ধোনি যখন ব্যাট করতে নামেন তখন গ্যালারিতে ওঠে হলুদ ঝড়। কিন্তু ক্রিকেট দেবতা যেন অন্য কিছু চেয়েছিলেন। গোটা বিশ্ব যাঁকে সেরা রানার হিসাবে জানে, সেই ধোনিই (২) এদিন ওভার থ্রো থেকে রান চুরি করতে গিয়ে রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। যদিও ধোনির রান আউট নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। রিপ্লেতে স্পষ্ট বোঝা যায়নি, ঈশান কিষাণের ডাইরেক্ট থ্রো নন স্ট্রাইকার এন্ডের উইকেট ভেঙে দেওয়ার আগে ধোনির ব্যাট ক্রিজ স্পর্শ করেছিল কিনা। যদিও মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে রিপ্লে দেখে ধোনি ডাগ-আউটে হাঁটা দেন। তার পরেই আউটের সিদ্ধান্ত জানান থার্ড আম্পায়ার নাইজেল লং। মনে করা হচ্ছে ধোনির ব্যাট মাটি স্পর্শ করেনি।
কাল কাজে এল না শেন ওয়াটসনের দুর্দান্ত ইনিংসও৷ চলতি আইপিএলে ওয়াটসনকে বারবার সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে। ফর্মে ছিলেন না, ‘বুড়ো’ অপবাদ শুনতে হয়েছিল। এদিন তিনিই প্রায় ম্যাচ জিতিয়ে দিচ্ছিলেন। মুম্বইয়ের ১৪৯ রান তাড়া করতে নেমে দু’ প্লেসি, রায়না, রায়ুডু এবং ধোনিকে হারিয়ে সিএসকে যখন ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যেতে চলেছে, তখনই ওয়াটসন জ্বলে উঠলেন। ৫৯ বলে ৮০ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেও তিনিই ট্র্যাজিক নায়ক।
ওয়াটসনের মতোই কেরিয়ারের সায়াহ্নে পৌঁছে যাওয়া লসিথ মালিঙ্গা মুম্বইয়ে এনে দিলেন উৎসবের আবহ। শেষ বলে জেতার জন্য চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ২ রান। মালিঙ্গার বল উইকেটের সামনে খুঁজে নেয় শার্দুল ঠাকুরের পা। তার পরেই সতীর্থদের কাঁধে শ্রীলঙ্কার পেসার। এর ঠিক দু’ বল আগেই রান আউট হয়ে ডাগ আউটে ফিরে গিয়েছেন ওয়াটসন। তাঁর ফেলে আসা কাজ সম্পূর্ণ করতে পারলেন না সতীর্থরা। মাঠের বাইরে বসে ওয়াটসনকে দেখতে হল ম্যাচ নিয়ে চলে গেলেন মালিঙ্গা।
অন্তিম ওভারে কায়রন পোলার্ড ও ডোয়েন ব্র্যাভোর ডুয়েল দারুণ জমে উঠেছিল। প্রথম তিনটি বলে কোনও রান নিতে না পারায় পোলার্ড চাপে পড়ে যান। ব্র্যাভো যখন চতুর্থ বল করতে যাচ্ছিলেন তখন পোলার্ড সরে যান৷ আম্পায়াররা তাঁকে সতর্কও করেন। চতুর্থ বলে রান আউট হন মিচেল ম্যাকলেনাঘান (০)। শেষ দু’টি ডেলিভারিতে বাউন্ডারি হাঁকান পোলার্ড। শেষ পর্যন্ত তিনি ২৫ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংসে রয়েছে তিনটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি। চেন্নাইয়ের হয়ে শার্দুল ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ২টি, দীপক চাহার ৪ ওভারে একটি মেডেন সহ ২৬ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ইমরান তাহিরের ঝুলিতে গিয়েছে ২টি উইকেট। মুম্বইয়ের হয়ে বুমরাহ ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে দুটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক তিনি৷ এবারের মত লড়াই শেষ। আবার অপেক্ষা এক বছরের।