দেশজুড়ে ঘৃণার বাতাবরণ দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে৷ ধর্মে-ধর্মে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যের অভাব প্রকট হচ্ছে৷ প্রেমের আবহ ছড়িয়ে পড়ুক দেশে, শান্তিতে থাকুন দেশবাসী৷ এমনই যেন এক বার্তা দিল রামপুরহাটের বাসিন্দা রেলের অস্থায়ী কর্মী অমিতকুমার প্রসাদ। রমজান মাসের সময় মসজিদে নামাজ পড়তে আসা ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষদের সাহায্য করার জন্য তিনি অবতীর্ণ হয়েছেন পাহারাদারের ভূমিকায়। তাঁর প্রচেষ্টায় বন্ধ হয়েছে সাইকেল, বাইক চুরি। মসজিদের ইমামসাহেব থেকে মসজিদ কমিটির সদস্যরা এই কৃতিত্বের পুরো ভাগটাই দিচ্ছেন হিন্দু পরিবারের যুবক অমিতকুমার প্রসাদকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রামপুরহাট থানার কাছেই বড় জামে মসজিদে রমজান মাসে নামাজ পড়তে আসেন মানুষেরা। কিন্তু বিগত কয়েকবছর নামাজ পড়ে বেরিয়ে মানুষ দেখেছে তাঁদের বাইক, সাইকেল চুরি গেছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে সেই চুরি বন্ধ হয়েছে অমিত কুমারের প্রচেষ্টায়। বিগত দিনে প্রায়ই এই ঘটনা হওয়ায় তিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন। বিনা পারিশ্রমিকে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মানুষদের সাইকেল ও বাইক পাহারা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই মতো প্রতিবছর রমজান মাসভর তিনি এই পাহারাদারের কাজ করে চলেছেন। ফলে পাঁচ বছর ধরে আর একটিও সাইকেল বা বাইক চুরি যায়নি।
অমিতবাবুর কথায়, ‘ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষরা যাতে নিশ্চিন্তে ধর্মাচরণ করতে পারেন সেই জন্য আমি তারাবির নামাজের সময় রাত ৮ থেকে ১০টা পর্যন্ত সাইকেল, বাইক ও মোবাইল পাহারা দিই।’ আবার অন্যদিকে মসজিদ কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সোহেল বলেন, ‘এই মসজিদে প্রায় শ’তিনেক মানুষ তারাবির নামাজ পড়তে আসেন। পবিত্র রমজান মাসে তারাবির নামাজে অংশগ্রহণকারীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে ধর্মাচারণ করতে পারেন, তারজন্য অমিতবাবু স্বেচ্ছায় ওই সময় মসজিদে আগত মানুষদের সাইকেল ও বাইক পাহারার দায়িত্ব নিয়েছেন। তার বিনিময়ে তিনি কিছু নেন না। এই কাজ তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে করে আসছেন।’
সব ধর্মকে সমান চোখে দেখার পাঠের শিক্ষা থেকেই স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে অমিতবাবু। মুসলিম ভাইদের সাহায্যার্থে হিন্দু অমিতের এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছে অনেকেই। কেন না সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন নজির খুব একটা দেখা যায় না।