মঙ্গলবারই কংগ্রেসের সাফল্য কামনায় সহস্রাধিক সঙ্গী সাধুকে সঙ্গে নিয়ে যজ্ঞ করেন বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী নামদেও দাস ত্যাগি ওরফে ‘কম্পিউটার বাবা’। আর ঠিক তার পরদিনই অর্থাৎ বুধবার তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেরুয়া উত্তরীয় পরে রোড শো করলেন ভোপালের কংগ্রেস প্রার্থী দিগ্বিজয় সিং। মঙ্গলবারের যজ্ঞেও যেমন কম্পিউটার বাবার উপস্থিতি সবার নজর কেড়েছিল, গতকালের রোড শো-তেও তাই হল।
উল্লেখ্য, ভোপালে হিন্দু ভোটারের সংখ্যা ৬৯ শতাংশ। আর মুসলিম প্রায় ২৬ শতাংশ। ব্যাপক এই হিন্দু ভোটারদের কাছে টানতে মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তাই তাঁর হিন্দু ভোটে থাবা বসাতেই এবার পাল্টা হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী হলেন প্রবীণ রাজনীতিক দিগ্বিজয়। শোনা যাচ্ছে, সাধ্বী প্রজ্ঞাকে হিন্দুত্বের নিরিখে টক্কর দিতে দিগ্বিজয়ের কর্মসূচি দারুণ কাজও দিচ্ছে। কয়েক মাস আগেই ভোপালে রামমন্দির নির্মাণের ঘোষণা থেকে শুরু করে কম্পিউটার বাবাকে কাছে টানা, সবটাই কংগ্রেস প্রার্থীর রাজনৈতিক কর্মসূচির অর্ন্তগত।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ‘কম্পিউটার বাবা’কে দিয়ে যজ্ঞ করান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কংগ্রেস নেতার বাড়ি যজ্ঞবাড়ি হয়ে ওঠে। সাদা কুর্তা-পায়জামা পরে পুজোয় বসেন তিনি। উপলক্ষ আগামী ১২ মে নির্বাচনে তিনি যেন বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। যজ্ঞের এক ফাঁকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কম্পিউটার বাবা বলেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে দিগ্বিজয় সিংয়ের জয়লাভের জন্য ‘হাত যজ্ঞ’র আয়োজন হয়েছে।
একইসঙ্গে বিজেপিকে একহাত নিয়ে বাবা বলেন, রাম মন্দির করব বলে বিজেপি দেশের প্রত্যেক সাধুসন্তকে বোকা বানিয়েছে। রাম মন্দির ওদের রাজনৈতিক ইস্যু। ধর্মীয় লক্ষ্য নয়। প্রত্যেক সাধুর এখন একটাই বক্তব্য, রাম মন্দির না হলে মোদী সরকারও হবে না। আর সাধ্বী প্রজ্ঞা সম্পর্কে কম্পিউটার বাবার কটাক্ষ, গেরুয়া ধারণ করলেই কেউ সাধ্বী হয়ে যায় না। উল্লেখ্য, এই কম্পিউটার বাবা একসময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
কিন্তু ‘মধুর’ সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যায় গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে। ভোটে টিকিট না পেয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু। এখন তিনি কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ। রাজনৈতিক মহলের মত, দিগ্বিজয় সিংয়ের যজ্ঞ সাধ্বী প্রজ্ঞাকে রাজনৈতিক মোকাবিলার একটি প্রয়াস। হিন্দু ভোট নিজেদের দিকে টানতে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের মতো কট্টর হিন্দু নেত্রীকে প্রার্থী করা বিজেপির অন্যতম মাস্টারস্ট্রোক। যার মোকাবিলায় কম্পিউটার বাবার মতো স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে ব্যবহার কংগ্রেস নেতার আর একটি কৌশল।