মোদীর জিএসটি এক জবর গেরো। মানুষ নাজেহাল যার জন্যে। তবে জিএসটির জটে মোক্ষম ভাবে আটকে গেলেন এক যাত্রী। রেলের টিকিট বাতিল করতে গিয়ে তিনি ফেরত পেলেন মাত্র ৩৩ টাকা। বেচারা ভদ্রলোক! টিকিট বাতিলও করলেন আবার টাকাও পেলেন না!
২০১৭ সালের এপ্রিল কোটা থেকে দিল্লি যাওয়ার জন্য গোল্ডেন টেম্পেল মেলে টিকিট বুক করেছিলেন বছর তিরিশের সুজিত স্বামী। তখনও এদেশে জিএসটি চালু হয়। তবে যাত্রার দিন ছিল ২০১৭ সালের ২ জুলাই। অর্থাৎ জিএসটি চালুর ঠিক পরের দিন। টিকিটের মূল্য ছিল ৭৬৫ টাকা। ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল তাঁর। কিন্তু শেষমেশ টিকিট কনফার্ম না হওয়ায় তা বাতিল করে দেন। সেই অর্থ ফেরত পেতে আইআরসিটিসি-র সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিলেন ওই যুবক। হিসেব মতো ৬৬৫ টাকা ফেরত পেতেন তিনি। কিন্তু জিএসটি কেটে সে টাকা পেলেন না।
দীর্ঘ দু’বছর ধরে সেই বাতিল টিকিটের টাকা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন এক ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু প্রাপ্য টাকা কিছুতেই ফেরত পাচ্ছিলেন না। অবশেষে অপেক্ষা মিটল। টিকিট বাতিলের অর্থ পেলেন যাত্রী। হিসেব মতো ৬৬৫ টাকা ফেরত পেতেন তিনি। কিন্তু জিএসটি কেটে সে টাকা পেলেন না। পেলেন মাত্র ৩৩ টাকা।
ক্ষুব্ধ সুজিত বলছেন, “টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য গত একবছর প্রচুর ছোটাছুটি করেছি। ওরা ক্ষতিপূরণ তো দিলই না, উলটে দু’টাকা কেটে নিল।” উল্লেখ্য, সুজিত একা নন। এমন ৯ লক্ষ যাত্রী রয়েছেন, যাঁরা ১ জুলাই থেকে ১১ জুলাই ২০১৭-র মধ্যে টিকিট বাতিল করায় সার্ভিস ট্যাক্স কেটে নেওয়া হয়েছে। যার হিসেব দাঁড়ায় ৩ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা।
এই প্রসঙ্গে আইআরসিটিসি-র তরফে জানানো হয়, রেলমন্ত্রকের কমার্সিয়াল সারকুলারের ৪৩ নম্বর নিয়ম অনুযায়ী, টিকিট আগে কাটা হলেও জিএসটি চালুর পর যদি কেউ তা বাতিল করেন, সেক্ষেত্রে সার্ভিস ট্যাক্সের টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না। সেই কারণেই ৬৫ টাকার সঙ্গে ৩৫ টাকা যোগ করে মোট ১০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য জানানো হয়েছিল, ১ জুলাই ২০১৭-র আগে বুক করা টিকিট ও তা বাতিলের ক্ষেত্রে সার্ভিস ট্যাক্স ফেরত দেওয়া হবে। তাই সেই ৩৫ টাকাও ফেরত পাবেন সুজিত। কিন্তু ১ মে ২০১৯-এ তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৩৩ টাকা।