দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে লোকসভা নির্বাচনের ৫ দফা। বাকি এখনও ২ দফার ভোটগ্রহণ। কিন্তু শেষ কয়েক দফায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি হচ্ছে বাংলায়। নানা জায়গা থেকে বিজেপি নেতা-কর্মীরা আক্রমণ চালাচ্ছে তৃণমূল সমর্থকদের ওপর। হামলা থেকে রেহাই পায়নি সাধারণ মানুষ, পুলিশকর্মী থেকে প্রিসাইডিং অফিসারও। যার ফলে দিনকতক ধরেই প্রশ্ন উঠছিল বাংলার বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক ও বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের ভূমিকা নিয়ে। এবার সেই কারণেই বিশেষ পর্যবেক্ষকদের অপসারণের দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক নাগরিক। বাংলায় বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে গিয়ে জন প্রতিনিধিত্ব আইন ভঙ্গ করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন, এই অভিযোগেই শীর্ষ আদালতে দায়ের করা হয়েছে মামলা৷ সোমবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটির মেনশনিং করা হয়৷
জানা গেছে, মামলাকারী রামু মান্ডি কাঁকিনাড়ার বাসিন্দা, নিজেও এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন৷ শীর্ষ আদালতে তাঁর অভিযোগ, ‘১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২০বি ধারায় সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা রয়েছে কী ভাবে পরিচালনা করতে হবে দেশের সাধারণ নির্বাচন৷ এই ধারায় ভাবে বলা আছে বর্তমানে সরকারি চাকরিরত কোনও আধিকারিককেই নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োগ করতে পারবে কমিশন৷ সেই আইনের ধারা লঙ্ঘন করেছে কমিশন, কারণ নির্বাচনের নিয়ামক সংস্থা পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন পরিচালনার কাজে দায়িত্ব দিয়েছে বিবেক দুবে ও অজয় নায়েকের মতো অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিকদের।’ তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র চাকরিতে বহাল থাকা সরকারি আধিকারিকদের কাজে লাগাতে পারবে কমিশন, এটা জানার পরেও পুলিশ পর্যবেক্ষক ও বিশেষ পর্যবেক্ষক পদে এই দুই অবসরপ্রাপ্ত আমলাকে নিয়োগ করে ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে বেআইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে খাস নিয়ামক সংস্থাই৷
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই মামলাটি গ্রহণ করেছে৷ প্রধান বিচারপতি নিজে জানিয়েছেন যে, আগামী শনিবার থেকে শীর্ষ আদালতে গরমের ছুটি শুরু হলেও মামলাটির গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে আদালতের অবকাশকালীন বেঞ্চে তার শুনানি হবে৷ কবে শুনানি হবে, তা জানাবেন রেজিস্ট্রার৷ উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সামনে এদিন যখন মামলাটির মেনশনিং করা হয়, তখন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি হিসেবে এজলাসে উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ সিং৷ তিনি মামলাটির আবেদনের বিরোধিতা করেন৷ সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করেন প্রধান বিচারপতি নিজেই৷ মামলাকারীর আইনজীবী তাঁর আবেদনে দাবি করেছেন যে, ‘তাঁর একথা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, কোনও একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই এই পর্যবেক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছে৷’