পশ্চিমবঙ্গে ফণা তুলতে না পারলেও উড়িষ্যাকে ছারখার করে দিয়েছে ফণী৷ কোথাও উড়ে গেছে বাড়ির চাল, উল্টে গেছে আস্ত একটা বাস, ভেঙে পড়েছে ক্রেন এবং মোবাইলের টাওয়ার৷ মৃত অন্তত ১৫৷
জায়গায় জায়গায় রয়েছে কেবল ধ্বংসের ছবি। কোথাও উপড়ে গেছে গাছ। কোথাও উড়ে গিয়েছে চাল। কোথাও আবার ঝড় উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে গোটা একটি গাড়ি। এছাড়া একাধিক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে নেই বিদ্যুৎ সংযোগও। স্তব্ধ যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
এদিকে, ফণীতে ক্ষতিগ্রস্থ রেল পরিষেবাও। উড়িষ্যা থেকে কোনও দূরপালার ট্রেন চলছে না। এছাড়া বন্ধ রয়েছে দক্ষিণ ভারতগামী অধিকাংশ ট্রেন।বিধ্বস্ত অবস্থা ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরেরও। জায়গায় জায়গায় ভেঙে গিয়েছে শেড। চুরমার হয়ে ভেঙে পড়েছে বিমানবন্দরের প্রায় সমস্ত কাঁচ। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর ডিরেক্টর জেনারেল সীতাংশু কর টুইট করে জানিয়েছেন, ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ দল যত দ্রুত সম্ভব ভুবনেশ্বর বিমাববন্দর সারাইয়ের কাজ করছে।
শনিবার দুপুরের মধ্যে পুরীতে গাছ ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের, কেন্দ্রপাড়া জেলার নয়াগড়ে একটি বাড়ি থেকে উড়ে ধ্বংসাবশেষ এক মহিলার জীবন কেড়ে নিয়েছে, কেন্দ্রপাড়া জেলাতেই আশ্রয়শিবিরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একজন বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ৪ জনের প্রাণহানির খবর এসেছে৷
খ্যাপা প্রকৃতির তাণ্ডবলীলার ছবি টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দেখতে পেয়েছেন দেশের নানা প্রান্তের মানুষ। কোথাও গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে, কাঁচা বাড়িঘর ধ্বংস করে ছুটেছে ফণী। কোথাও, ভুবনেশ্বরের নির্মীয়মাণ বহুতল বাড়িতে যেমন, বিশাল উঁচু একটি ক্রেনকে খেলনার মতোই ভেঙে ফেলেছে ঝড়। কটকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলেছে মোবাইল টাওয়ার। ভুবনেশ্বরে এইমসের হস্টেলের ছাদ থেকে স্টিলের ফ্রেমে আটকানো আচ্ছাদন হেলায় উড়িয়ে নিয়ে গেছে পলিথিনের মতো, ভেঙেচুরে দিয়েছে কেআইটি–র জানলা, ফ্রেম সমেত। বহু জায়গায় রেললাইন উপড়ে গিয়েছে। রাস্তার ওপর ভেঙে পড়েছে টাওয়ার, বিদ্যুতের খুঁটি। পুরী, ভুবনেশ্বরের প্রবীণদের অনেকেই বলছেন, প্রকৃতির এমন ভয়াল-ভয়ানক রূপ আগে কখনও দেখেননি তাঁরা।