কর্ণাটকে ভোট শেষ হওয়ার পর থেকে টানা দশ দিন ধরে বেড়েই চলেছে তেলের দাম। গতকালের তুলনায় ৩০ পয়সা বেড়ে আজ কলকাতায় পেট্রোলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৯ টাকা ৮৩ পয়সায়। আগে কখনো এই ভাবে দাম বাড়েনি পেট্রোপণ্যের । ডিজেলের দাম ও আগে কখনো ৭০ টাকায় পৌঁছায়নি। এই বিপুল মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৮ই জুন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পেট্রোল পাম্প ডিলার্স এসোসিয়েশন। আগামী দিনেও দাম আরো উর্ধমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশের সমস্ত শহরে পেট্রোলের দাম বেড়েছে। মুম্বাইয়ে দাম বেড়ে হয়েছে ৮৪ টাকা ৯৯ পয়সা, দিল্লীতে প্রতি লিটারে ৭৭ টাকা ১৭ পয়সা, পাটনা ও ভোপালে বেড়ে হয়েছে ৮২ টাকা। দিল্লীতে গত দুদিনে ৬০ পয়সা দাম বেড়েছে। এর আগে কোনো দিনও রাজধানীতে পেট্রোলের দাম এত বেশি হয়নি।
ডিজেলের দামও সমান তালে বেড়ে চলেছে। প্রতি লিটারে দাম হয়েছে ৬৮ টাকা ৩৪ পয়সা দিল্লীতে। মুম্বাইয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ টাকা ৭৬ পয়সা, চেন্নাইয়ে ৭২ টাকা ১৪ পয়সা।
এই দুটি জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সারা দেশেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। দিল্লীর কংগ্রেস নেতারা সাইকেল চালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। হায়দ্রাবাদ ও জয়পুরেও পথে নেমে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে জরুরি বৈঠকেও বসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মোদী ক্যাবিনেটর শীর্ষ নেতারা। বৈঠক শেষে আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের মাধ্যমে গ্রাহকদের সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র । যাতে এই প্রতিনিয়ত দামের উতর-চড়াই ও তার ফলে উদ্ভূত সমস্যাও এড়ানো সম্ভব হয়। যদিও শুল্ক ছাড় দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে কি না , সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। গতবছর জুন মাসে ১৫ বছর ধরে চলে আসা প্রত্যেক ১৫ দিন অন্তর তেলের মূল্য নির্ধারণ করার নিয়মকে পাল্টে দৈনিক পরিবর্তনের নিয়ম চালু করে কেন্দ্র। সেই থেকেই প্রতিদিনই পেট্রোল ডিজেলের দাম পরিবর্তন হতো । কিন্তু , কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে আচমকা সেই দৈনিক বৃদ্ধিকে সাময়িক স্থগিত রাখে মোদী সরকার। ১৯ দিন তেলের কোনো মূল্যবৃদ্ধি হয়নি। ভোট মিটে যাওয়ার পর গত ১১ দিনে ১০ বার বেড়েছে জ্বালানির দাম।
এই বিপুল মূল্যবৃদ্ধির ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর বিস্তর চাপ বেড়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে একদিকে যেমন শুল্ক কমানোর দাবি উঠছে তেমনিই এই দুটি জ্বালানিকে জিএসটি-র আওতায় আনার স্বপক্ষেও জোরালো সাওয়াল করছেন অনেকে।