বাংলাই এখন শিল্পের একমাত্র গন্তব্য। রাজ্যের নতুন শিল্পনীতি, জমিনীতি শিল্পস্থাপনের পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী। ই-গভর্ন্যান্সে বাংলা এখন এক নম্বরে। আবার ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পেও বাংলা এক নম্বরে। বাংলায় শিল্প গড়ার উপযুক্ত পরিকাঠামো-সহ ১০ হাজার একর জমিও প্রস্তুত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হওয়া বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে এই বার্তাই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় শিল্পের জোয়ার ও লগ্নীর ধারাকে অব্যাহত রাখতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যেই আগামী বছরের বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটের প্রস্তুতিপর্ব শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
জানা গেছে, আগামী বছরের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যাঁরা অংশগ্রহণ করতে চান, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন পর্ব চালু হয়ে গিয়েছে অনলাইনে। কে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কেন এখানে অংশ নিতে চাইছেন, তার তথ্য দিয়ে ওই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে শিল্পকর্তাদের। কিন্তু এখনও শিল্প সম্মেলনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেনি শিল্পদফতর। লোকসভা ভোটপর্ব মিটলেই তা ঘোষণা হতে পারে বলে আশা শিল্পমহলের।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে এবারের বাণিজ্য সম্মেলন। অন্যান্য বছর জানুয়ারি মাসকেই রাজ্য সরকার বাণিজ্য সম্মেলনের জন্য বেছে নিলেও, এবার তার আয়োজন ছিল ফেব্রুয়ারিতে। সু্ইৎজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে শিল্পপতিরা উপস্থিত থাকতে পারেন ভেবেই পিছিয়েছিল সম্মেলন। রাজ্য সরকার তেমনটাই দাবি করেছিল। কিন্তু আগামী বছর শিল্পসভার আয়োজন কবে হবে, এ বছর তা ঘোষণা করা হয়নি। অন্যান্য বছর অবশ্য মেলার শেষ দিনেই পরের বাণিজ্য সম্মেলনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চলতি বছরের শিল্প সম্মেলনে মুকেশ আম্বানি, সজ্জন জিন্দালদের মতো শিল্পপতিরা যেমন হাজির হয়েছেন, তেমন তাঁরা বড় ঘোষণাও করে গিয়েছেন। সেই তালিকায় আছেন আরও বেশ কিছু তারকা শিল্পপতি। কিন্তু বহু ছোট ও মাঝারি উদ্যোগপতিও আছেন, যাঁরা ওই সম্মেলনে নিজেদের বিনিয়োগ প্রস্তাবনা পেশ করেছেন। বিনিয়োগ প্রস্তাবের অঙ্ক পৌঁছেছে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকায়। আবার অনেকেই আছেন, যাঁরা সম্মেলনে আসার চেষ্টা করেও শেষ মুহূর্তে আমন্ত্রণপত্র জোগাড় করতে পারেননি। সেই কারণেই রাজ্য আগামী বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন চালু করে দিয়েছে রাজ্য। তবে কবে সেই সম্মেলন হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ভোটপর্ব মিটলেই জানা যাবে নির্ঘণ্ট।
প্রসঙ্গত, বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট রাজ্যের শো-কেস উৎসব, যার মধ্যমে নিজেদের ইন্ডাস্ট্রি-ব্র্যান্ডিং করে সরকার। এখন কম-বেশি প্রায় সব রাজ্যই এইভাবে নিজেদের শিল্প সম্ভাবনাকে সামনে আনতে চাইছে। কিন্তু প্রতি বছর সম্মেলন করার তাগিদ নেই কারও। এমনকী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী যে ‘ভাইব্রান্ট গুজরাত’-এর আয়োজন করে সবার নজর কেড়েছিলেন, সেই শিল্প সম্মেলনও প্রতি বছর হয় না। এক বছর অন্তর তার অয়োজন করে পশ্চিমের রাজ্যটি। তাই বাংলা যেভাবে ফি বছর সেই সম্মেলনের সাহস দেখাচ্ছে, তা শিল্পপতিদের কাছে তারিফের বিষয়।