বালাকোটের জঙ্গী ডেরায় হামলার ভিডিয়ো নেই ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে। কারণ শেষ মুহূর্তে ছকবদল করতে হয়েছিল। আগের পরিকল্পনামাফিক হয়নি হামলা। আর তাই বালাকোটের হামলার কোনো ভিডিও নেই ভারতীয় বায়ু সেনাদের কাছে। বায়ুসেনার রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে এক সংবাদ সংস্থায়।
পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার জবাব দিতেই গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের ডেরায় আকাশপথে হামলা চালায় বায়ুসেনা। এমনটাই দাবি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু তার পর থেকে বালাকোট নিয়ে বিতর্ক চলছেই। ‘হামলার প্রমাণ কই’ বলে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। সংবাদ সংস্থাটির দাবি, সম্প্রতি বায়ুসেনার রিপোর্টে তার জবাব দেওয়া হয়েছে।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সে দিন বালাকোটের জঙ্গী শিবির ধ্বংস করতে ‘ক্রিস্টাল মেজ়’ নামে একটি ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র (আকাশ থেকে ভূমি) ছোড়ার কথাও ছিল। হামলার পাশাপাশি গোটা ঘটনা ভিডিয়ো করার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্রটির। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি আর ছোড়া সম্ভব হয়নি। আর তাই সেনার হাতে ভিডিয়ো নেই। কেবল উপগ্রহ চিত্র রয়েছে। রিপোর্টে বায়ুসেনার দাবি, ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে বায়ুসেনার ‘মিরাজ ২০০০’ যুদ্ধবিমান বেশ কিছুটা নীচে নামে। তার পর সুযোগ বুঝে পাঁচটি ‘স্পাইস ২০০০’ পেনিট্রেটর গ্লাইড বোমা ফেলে। চারটি নিশানা ছিল ‘স্পাইস ২০০০’-এর। তিনটিতে গিয়ে আঘাত করে তা। একটিতে ফেলা হয়েছিল তিনটি বোমা। অন্য দু’টিতে একটি করে বোমা ফেলা হয়। কিন্তু ‘ক্রিস্টাল মেজ়’-এর মতো লাইভ ভিডিয়ো করার ক্ষমতা নেই ‘স্পাইস ২০০০’-এর।
বায়ুসেনার ওই সূত্রটি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে, সে দিন মেঘ অনেকটা নীচে ছিল। তার জন্যেই পূর্ব নির্ধারিত ভাবে ‘স্পাইস ২০০০’-এর সঙ্গে ছ’টি ‘ক্রিস্টাল মেজ়’ উৎক্ষেপণ করা যায়নি। ঠিক ছিল এক সঙ্গে হামলা করবে ‘ক্রিস্টাল মেজ়’ ও ‘স্পাইস ২০০০’। ও দিকে হামলার পরের দিনই ‘ইউরোপিয়ান স্পেস ইমেজিং’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যাড্রিয়ান জেভেনবার্গেন জইশ শিবিরের কিছু ছবি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তাতে হামলার কোনও চিহ্ন মেলেনি। বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছিল তাতে। প্রায় ‘অক্ষত’ শিবিরের জন্যও যে ‘ক্রিস্টাল মেজ়’ উৎক্ষেপণ করতে না পারাই দায়ী, রিপোর্টে সেই ইঙ্গিত আছে।
কিন্তু ভারতের কাছে যে উপগ্রহচিত্র আছে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য এই মুহূর্তে সেগুলিও প্রকাশ্যে আনা নিষেধ। ভবিষ্যতে আনা হবে কি না, তা-ও স্পষ্ট জানানো হয়নি।