হাতে আর মাত্র কটা দিন। তাই দিন রাত এক করে প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। চড়া রোদকে উপেক্ষা করেই সকলে পৌঁছে যাচ্ছেন মানুষের কাছে। কারণ এবারের লড়াই সাম্প্রদায়িক মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই। গরমকে উপেক্ষা করে শুক্রবার তেহট্টের বিনোদনগর হাইস্কুল মাঠে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে জনসভা করলেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
সভা থেকে বিজেপি–র নাম না করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল এমন পরিবেশ তৈরি করেছে যে মানুষকে বলে দিচ্ছে তারা এদেশের মানুষ নয়। এটা কখনই চলতে পারে না। মানুষকে বোকা বানিয়ে আর রাখতে পারবে না ওরা। দেশকে এরকম অধপতনের হাত থেকে বাঁচাতে প্রয়োজন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত একজন জননেত্রীর’।
এই সভায় ফিরহাদ নরেন্দ্র মোদীর একের পর এক জনবিরোধী কাজের খতিয়ান মেলে ধরেন জনসমক্ষে। উঠে আসে, নোটবন্দি, জিএসটি থেকে দেশের সেনাদের নিয়ে রাজনীতির কথা। ফিরহাদ অভিযোগ করেন, ‘ভারতবর্ষকে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মোদী। উনি মিরজাফরের মতো কাজ করে চলেছেন।’ তাই নতুন ভারতবর্ষ তৈরি করতে তৃণমূলের হাত শক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘তা না হলে সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে সবাই বিলীন হয়ে যাব আমরা।’
তিনি বলেন, ‘তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের যে জোয়ার চলছে, তা দেখেই মানুষ এবার তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেতে চাইছেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে বাংলা এগিয়ে গেলেও ভারত সে ভাবে এগোতে পারেনি। এর কারণ, ভারতের ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। যে দলটি দাঙ্গা আর ভাঙার ওপর নির্ভর করে রাজনীতি করে। তাই শুধু বাংলাই নয়, ভিন রাজ্যের মানুষও এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইছেন মমতা ব্যানার্জিকে। সারা দেশেই তাঁর উন্নয়নের মডেল যাতে ছড়িয়ে পড়ে, সেইজন্যই মানুষ মমতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসাতে চাইছেন গোটা দেশের মানুষ। আর সেটা বুঝতে পেরেই কিছু লোক বাইরে এই রাজ্যে এসে দাঙ্গা লাগিয়ে দিতে চাইছে। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে।’
ফিরহাদের কথায়, ‘আমার মাতৃভূমি মানে মা যেখানে আমার জন্ম দিয়েছেন। যেখানে আমি বড় হলাম সেই জায়গা আমার মাতৃভূমি। কিন্তু ওই রাজনৈতিক দল বলছে না। এটা কখনও মেনে নেওয়া যায়? আর এই পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের রাজ্যে সিপিএম এবং কংগ্রেস নিজেদের ভোট দেওয়ার জন্য প্রচার করছে। তারা কার ভোট কাটাকাটি করতে চাইছে? তারা চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট কেটে নিতে। তাতে লাভ হবে বিজেপি–র। আর বিজেপি ক্ষমতায় এলে নিশ্চিত ভাবে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে।’