‘বিজেপির সাংসদ এবং বিজেপি-আরএসএস-এর নেতা-মন্ত্রীরা নিজেরা টাকা নিয়ে দৌড়য়। আর মুখে বলে, তৃণমূল কোল মাফিয়া। যদি তা-ই হয়, তা হলে কেন্দ্রীয় পুলিশ কী করছে?’ এবার ঠিক এই ভাষাতেই অবৈধ কয়লার কারবার নিয়ে বিজেপির পাশাপাশি আরএসএসকেও বিঁধলেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে একাধিক নির্বাচনী সভায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, আরএসএস রাজ্যের ভোটারদের প্রভাবিত করতে টাকা ছড়াচ্ছে। আর এবার তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন আরএসএস-এর মদতেই এখন কয়লা মাফিয়াদের এত বাড়বাড়ন্ত।
পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে প্রচার-সভা থেকে শুক্রবার মমতা বলেন, ‘এখানে কয়লা মাফিয়া রয়েছে। এদের রোখার দায়িত্ব সিআইএসএফ-এর। কেন্দ্রীয় সংস্থার (ইসিএল) সম্পত্তি দেখে কেন্দ্রীয় পুলিশ (নিরাপত্তা বাহিনী)। তোমাদের পুলিশের অন্দরে কয়লা মাফিয়া রয়েছে।’ সেই সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, ‘আরএসএস-এর নেতারা, বিজেপির সাংসদ এবং বিজেপি এখন টাকা নিয়ে দৌড়য়। ওরা বলে, তৃণমূল কোল মাফিয়া। যদি তা-ই হয়, তা হলে তোমার পুলিশ কী করছে? তোমরা সব থেকে বেশি টাকা কোল মাফিয়ার কাছে নাও।’
ad id=’58631′]
প্রসঙ্গত, এলাকার সিটু, আইএনটিইউসি-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, রানিগঞ্জ, বারাবনি, সালানপুর, জামুড়িয়া-সহ নানা এলাকায় বৈধ খনি থেকে কয়লা চুরি হয়। অবৈধ ভাবে খোলামুখ খনি, কুয়ো খাদ খুঁড়েও এই কারবার চলে। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, বর্ষা বাদে সারা বছর দৈনিক অন্তত দেড়শো ট্রাক (বহন ক্ষমতা ৪০ টন) চলে শুধু রানিগঞ্জে। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় দৈনিক চলা কয়লা পাচারের ট্রাকের সংখ্যা অন্তত তার দশ গুণ। এই বেআইনি কয়লার ক্রেতা মূলত এলাকার ইটভাটা, ছোট কারখানাগুলির একটা অংশ।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানাচ্ছেন, কয়লা চুরিতে জড়িতদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা সিআইএসএফের নেই। ইসিএলের নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে অভিযান চালিয়ে দুষ্কৃতীদের ধরে, সিআইএসএফ পুলিশে দেয়। তাঁর দাবি, ‘গত এক বছরে প্রায় পাঁচশো বার বিভিন্ন থানায় সংস্থার তরফে এ ধরনের অভিযোগ জানানো হয়েছে।’ আসানসোলের পুলিশ-কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘ইসিএল বা সিআইএসএফ কয়লা চুরির অভিযোগ করলে সহযোগিতা করি। অভিযোগ পেলেই আইনি পদক্ষেপ করা হয়।’
গতকাল আসানসোলের সভায় বিজেপি প্রার্থী বাবুলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘এখানকার সাংসদ পাঁচ বছরে কাজ করেননি। মাঝে মাঝে এসে আসানসোলকে অশান্ত করেছেন। উনি একটুও বিশ্বাসযোগ্য নন।’ তিনি এ-ও বলেন যে, ‘বাঙালি সংস্কৃতি জানেন না বাবুল সুপ্রিয়। এলাকার উন্নয়নে কোনও কাজ করেননি। খালি গুন্ডাগিরি করেছে।’ বাবুল সুপ্রিয় রোজ আসানসোলে এসে ‘দাঙ্গা’ বাঁধানোর চেষ্টা করেন, নাটক করেন বলেও তোপ দাগেন মমতা।