‘হারাতঙ্ক রোগে ভুগছেন মোদী৷ রোজ বাংলায় এসে কুৎসা করছে৷ ওঁরা যত আসবে আমার ভোট তত বাড়বে৷ ওঁরা জানে ওঁদের আমিই হারাতে পারি৷’ বৃহস্পতিবার বীরভূমের সিউড়ির জনসভা থেকে ঠিক এই ভাষাতেই বিজেপিকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, বাংলায় তাদের পায়ের তলা মাটি আলগা হচ্ছে বুঝেই বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারে এ রাজ্যে ছুটে আসছেন মোদী, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংয়ের মতো একের পর এক হেভিওয়েট নেতা৷ বিজেপির প্রচারের এমন আয়োজন দেখেই তাদের কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলনেত্রী।
মমতার সভার আগের দিনই শান্তিনিকেতনে সভা করতে এসে নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছিলেন, ‘গুরুদেবের শান্তিনিকেতনে অশান্তি করছে গুন্ডারা।’ গতকাল সেই অভিযোগের জবাব ফিরিয়ে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘শান্তিনিকেতনে গুন্ডা পেলেন কোথা থেকে? বসন্তের কোকিল, ভোট চাইতে আসেন, আবার বড় বড় কথা!’ রাজ্যে এসে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য নিয়েও গলা ফাটাচ্ছেন মোদী। কিন্তু, তা নিয়ে সিউড়ির জনসভা থেকে মমতার পাল্টা তোপ, কন্যাশ্রীকে নকল করেই বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু, তাতেও মোদী সরকারের সাফল্যই নেই। মোদী সরকার ঠিকমতো নকলও করতে শেখেনি বলেও খোঁচা দিয়েছেন তিনি৷
বোলপুরের উন্নয়ন নাকি চোখেই পড়েনি মোদীর। এ নিয়েও গতকাল তাঁকে বিঁধতে ছাড়েননি মমতা। তাঁর সাফ কথা, ‘মোদীবাবু আপনি দেখতে পান না৷ শ্মশান বানাবেন বলছেন, আপনারা তো লোক মেরে সোজা শ্মশানঘাটে পাঠান৷’ ধর্মীয় মেরুকরণ বা বিভাজনের রাজনীতি নিয়েও বিজেপিকে বিঁধে মমতার কড়া মন্তব্য, ‘৫ বছর কোনও কাজ করেনি বিজেপি৷ ৫ বছরে রাম মন্দির করতে পারেনি। বিজেপির হিন্দুত্ব মানি না৷ উন্নয়ন কেন হয়নি, তার জবাব দিন৷ ভোট এলে হিন্দু-মুসলমানে ভাগাভাগি৷’ এনআরসি নিয়ে বিজেপি নেতাদের হুমকির পাল্টা দিতে মমতার চ্যালেঞ্জ, ‘বাংলায় এনআরসি হতে দেব না। এটা আমার লড়াই। দেখে নেব আমি।’
গতবার উত্তরপ্রদেশ থেকে ৭৩টি আসন জিতেছিল বিজেপি। তবে এবার যা তারা গোহারা হারবে, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘এবার মায়াবতী-অখিলেশ জোটের কাছে হেরে ১৩টি আসনও জিতবে না বিজেপি।’ এরপরই আক্রমণের সুর সপ্তমে চড়িয়ে দেউচা পাঁচামির কোল ব্লকের মউ সাক্ষর নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তিন বছর ধরে টালবাহানার অভিযোগ তোলেন মমতা। তাঁর দাবি, ফোন করলেও সাড়া দেন না প্রধানমন্ত্রী। কাজ এগোচ্ছে না কেন, সে বিষয়ে সিউড়ির জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর কৈফিয়তও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।