অসুস্থতার কারণে জামিনে মুক্ত তিনি। তবে জামিনে জেল থেকে বেরিয়েও বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। আর তারপর থেকেই একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বারবার শিরোনামে এসেছেন মালেগাঁও বিস্ফোরণের মতো গুরুতর ঘটনায় অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। প্রার্থী হিসেবে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে যেদিন থেকে পা রেখেছেন সেদিন থেকেই মুখ খুলে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন তিনি। যার জেরে একই দিনে তাঁকে দুটি নোটিস পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল করার দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু এর মধ্যেই এই বিজেপি প্রার্থীর পাশে দাঁড়ালেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা শিবরাজ সিং চৌহান। এর আগে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাধ্বীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, আর এবার চৌহান তাঁর সমর্থনে বললেন, ‘সাধ্বী দেশভক্ত! ও ভারতের এক নিষ্পাপ মেয়ে!’ তিনি এই দাবিও করেন যে, ভোপাল থেকে বিশাল ব্যবধানে জিতবেন মালেগাঁও বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা।
সোমবার সাংবাদিকদের সামনে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতার দাবি, মালেগাঁও বিস্ফোরণে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রজ্ঞাকে! উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ের এই বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছিলেন। একটি মোটর সাইকেলে বোমা রাখা ছিল। এই বিস্ফোরণে যুক্ত থাকার অভিযোগে এটিএস-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্রীকান্ত পুরোহিত এবং সাধ্বী প্রজ্ঞা। তাঁদের দুজনকে সে’সময় ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দিয়েছিল কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে শিবরাজের সাফাই, ‘সাধ্বীর বিরুদ্ধে আইনকে ভুলভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। জেলের মধ্যে ওঁর ওপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছে। ওঁকে কী সহ্য করতে হয়েছে, তা শুনলে সবাই শিউরে উঠবেন।’ এমনকী এ ব্যাপারে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা সাধ্বী প্রজ্ঞার প্রতিদ্বন্দ্বী দিগ্বিজয় সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন শিবরাজ। তিনি বলেন, ‘ওঁর বিরুদ্ধে হিন্দু সন্ত্রাসের হাওয়া তুলে ওঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ সবের পিছনে মাথা ছিলেন দিগ্বিজয় সিং।’
শিবরাজ সিং চৌহান আরও জানিয়েছেন, ১৯৮৯ সাল থেকে এই কেন্দ্র বিজেপির দখলে। তাই অপেক্ষাকৃত সহজ কেন্দ্রেই প্রার্থী করা হয়েছে প্রজ্ঞাকে। তিনি বলেন, ‘বিজেপির যে কোনও প্রার্থীই এই কেন্দ্রে দিগ্বিজয় সিংকে হারাতে পারে। কিন্তু দলের তরফে প্রজ্ঞাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। আমি বুঝতে পারছি না, এটা নিয়ে এত হাঙ্গামা করার কী আছে?’ জামিনে মুক্তি পেলেও প্রজ্ঞার ভোটে দাঁড়ানোর পুরো অধিকার আছে বলেই মন্তব্য করেছেন শিবরাজ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে সাধ্বী প্রজ্ঞা মন্তব্য করেছিলেন, হেমন্ত কারকারে তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার করেছিলেন। তাই তিনি অভিশাপ দিয়েছিলেন কারকারেকে। তারপরেই ২৬/১১-এর মুম্বই হানায় প্রাণ যায় কারকারের। তাঁর কথায়, ‘লকআপে আমার ওপর দিনের পর দিন পুলিশি অত্যাচারের সময় হেমন্ত কারকারেকে অভিশাপ দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, ভয়ানক মৃত্যু হবে তাঁর। সেই অভিশাপ ফলে গিয়েছে।’ এরপর আরও একবার বিতর্কিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে আমি গর্বিত। ওখানেই ফের যাব রামমন্দির বানাতে।’