গত ম্যাচে কলকাতাকে হারিয়ে বাড়তি উত্তেজনায় ফুটছিল বিরাটের ব্যাঙ্গালোর। আর সেই জেতার ক্ষিদেতেই বিরাটেরা জয় ছিনিয়ে আনলেন ধোনির কাছ থেকে। তবে ম্যাচ জিততে না পারলেও সবার মন জিয়ে নিলেন ক্যাপ্টেন কুল।
কে বলবে, এই মানুষটার বয়স ৩৮? যে রকম দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন, ধোনিকে নিয়ে এখনও স্বপ্ন দেখা যায়। সেটা আবারও প্রমাণ হল রবিবার রাতে। বেঙ্গালুরুর ৭ উইকেটে ১৬১ রান তাড়া করতে গিয়ে ২৮ রানে ৪ উইকেট চলে গিয়েছিল চেন্নাইয়ের। সেখান থেকে ঠাণ্ডা মাথায় ইনিংস এগিয়ে নিয়ে গেলেন ধোনি। রায়াডু (২৯), কেদার (৯), জাডেজা (১১), ব্র্যাভো (৫) সবাই ফিরে গেলেন। শুধু একা কুম্ভের মতো লড়লেন ধোনি। শেষ দু’ওভারে দাঁড়িয়েও সিঙ্গলস নিলেন না বড় শট খেলবেন বলে। ৭ টি ছয় ও ৫ টি চার মেরেছেন ধোনি। তার মধ্যে উমেশ যাদবকে শেষ ওভারেই মেরেছেন তিনটে ছয়। সঙ্গে একটা চার। দাঁড়াল এ রকম, ৪-৬-৬-২-৬! পঞ্চম বলটাকে ধোনি যখন বাউন্ডারির ও পারে ফেললেন, তখন বিরাটের মুখে চরম হতাশা। সেই মুখই উজ্জ্বল হয়ে উঠল শেষ বলে। ১ রান জিতে প্লে অফের লড়াইয়ে এখনও রইলেন বিরাটরা।
ম্যাচের পরে কোহালি এগিয়ে এসে অভিনন্দন জানিয়ে গেলেন ধোনিকে। তবে এ রকম ইনিংস খেলেও ম্যাচের সেরার পুরস্কার পাননি ধোনি। সেরার পুরস্কার দেওয়া হল পার্থিব পটেলকে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বলা হচ্ছে, জয়ী দলের ক্রিকেটারের হাতে ম্যাচের সেরার পুরস্কার তুলে দেওয়ার এই রীতি এখনও চলছে। আগের ম্যাচে ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে দুরন্ত সেঞ্চুরি করে আসা কোহালি অবশ্য রান পাননি এই ম্যাচে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দিনের তৃতীয় ওভারেই দীপক চাহারের বলে ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কোহালি (৯)।
রাজসিক ইনিংস উপহার দিয়েও এক রানে হার! চেন্নাই সুপার কিংস ভক্তেরা হতাশায় কপাল চাপড়ালেও তিনি শান্তই থাকছেন। রবিবার ম্যাচের পরে ধোনি জানিয়ে গেলেন, হিসেবে সামান্য ভুলের কারণে হারতে হয়েছে। বলেছেন, ‘‘আমরা তো অনেক কম রানের মধ্যেই আটকে দিয়েছিলাম আরসিবিকে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হিসেবটাই আসল ব্যাপার। সেখানে ঝুঁকি নিতেই হয়। আমাদের সেই হিসেবে একটু ভুল হয়েছিল বলে ম্যাচটা বেরিয়ে গেল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘চেষ্টা করেছিলাম। রাতের শিশিরে একটু সমস্যা হচ্ছিল। তাই শেষ বলে পৌঁছে হারলাম।’’ তবে ধোনি মানছেন, তাঁর দলের ফিল্ডিং আশাব্যঞ্জক হয়নি। বলেছেন, ‘‘বেশ কিছু বাজে বাউন্ডারি দিয়েছি আমরা। তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’’
আগের ম্যাচে কোমরের চোটের জন্য বিশ্রামে ছিলেন ধোনি। এই ম্যাচে ফিরে অবিশ্বাস্য এক ইনিংস উপহার দিলেন চিন্নাস্বামীর দর্শকদের। রান তাড়া করতে নেমে ডেল স্টেনের বিধ্বংসী গতির সামনে উইকেট হারাতে থাকে চেন্নাই। কিন্তু লড়াইটা একাই বিপক্ষ শিবিরে নিয়ে যান ধোনি। কিছুটা সাহায্য করেছিলেন অম্বাতি রায়ডু। শেষ ওভার পর্যন্ত বিশ্বাস করা যায়নি, এই ম্যাচে এমন লড়াই হতে পারে। বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম সেরা ফিনিশার কেন তাঁকে বলা হয়, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন ধোনি। বিশ্বকাপের আগে ধোনির এই ফর্ম কিন্তু স্বপ্ন দেখাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের।