বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নিজের মনের মত করে সাজিয়ে তুলেছেন এই বাংলাকে। তাঁর উদ্যোগেই বাংলা থেকে দূর হয়েছে অশান্তি এবং হিংসা। ভোটের প্রচারে এই শান্তিকেই সামনে আনছে তৃণমূল।
বাম জমানায় কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের ভাজাচাউলি ছিল সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর। বোমা, গুলি ও এলাকা দখলের লড়াইয়ে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে এইসব এলাকা। ১৯৮২ সাল থেকে ঘর লুট ও ঘর ছাড়া করার রাজনীতিতে বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। সেই ভাজাচাউলি বা শুনিয়ায় এখন সন্ধ্যা হলে বোমা-গুলির শব্দ পাওয়া যায় না। ওড়িশা কোস্ট ক্যানেল টপকে ভাজাচাউলিতে কেউ ঢুকলেই তার চোখ আটকে যাবে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ কলা বাগানে। ক্যানেল পাড়ের ডুমুরবেড়িয়া স্ট্যান্ড থেকে গোবিন্দপুর পর্যন্ত কলাগাছের সারি দেখলে একবার না একবার থমকে দাঁড়াতে হবে। ৭০ হাজার কলাগাছের জন্য কাজ করছেন শয়ে শয়ে স্থানীয় বাসিন্দা। এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে শুধু মাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে।
বাম জমানার সন্ত্রাসের গড়ে উন্নয়নের অস্ত্রেই বাজিমাত করতে চাইছে তৃণমূল। ভাজাচাউলি, শুনিয়ার মতো এলাকায় বোমা-গুলির আওয়াজ ও এলাকা দখলের রাজনীতিকে অতীত করে ১০০দিনের কাজ, রাস্তায় পথবাতি-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে মানুষের মন জয়ে সচেষ্ট শাসক শিবির। ভোটে সেই উন্নয়নের সুফল ঘরে তুলতে এবার ময়দানে নেমেছে তারা। অন্যদিকে, প্রচারে ঝড় তোলা দূরের কথা, এই সব সন্ত্রাসের গড়ে এখনও বিরোধীদের সংগঠন সেইভাবে দাঁনা বাঁধতে পারেনি।
ভাজাচাউলি ছাড়াও পাশের আমতলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সুনিয়ায় দীর্ঘপথে শাসক দলের একচ্ছত্র প্রচার। বিরোধীদের দেওয়াল লিখন বা পতাকার তেমন কোনও উপস্থিতি নেই। ভাজাচাউলির বাসিন্দা তথা কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি বিকাশ বেজ বলেন, সিপিএম জোর করে এলাকা দখল করত। আমরা উন্নয়নমূলক কাজ দিয়ে মানুষের মন দখল করতে চাই। কলা বাগানে দুই বছরে ৪০ হাজার মানুষ কাজ, আম বাগান ও কলাচারা তৈরির নার্সারিতে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। রাস্তায় আলো, ঘরে ঘরে শিল্পীভাতা সহ সমস্ত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা এলাকাবাসী পেয়েছেন। তাই মানুষ আমাদের সঙ্গেই থাকবে।
কলাবাগানে কাজ করা সত্যব্রত সিট, সুদেষ্ণা মান্না বলেন, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে এই কলা বাগান হয়েছে। আমরা সকলে এই প্রকল্পে কাজ করছি। সিপিএম ও বিজেপির কথা শুনে বলেন, টিভিতে ওদের দেখি। এলাকায় কেউ নেই। শুধু কলা বাগান নয়, আমের বাগান ও কলাচারা তৈরির নার্সারিতেও প্রচুর মানুষ কাজ পেয়েছেন। মূল রাস্তায় গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে স্ট্রিট লাইট লেগেছে। ভাজাচাউলি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস লাগোয়া চায়ের দোকানে তাসের আড্ডায় বসা স্থানীয় বাসিন্দা দিবাকর শীট বললেন, এই এলাকার প্রত্যেকের বাড়িতেই কোনও না কোনও সুবিধা পৌঁছেছে। সব থেকে বেশি সুবিধা পেয়েছেন শিল্পীরা। ভাতার সৌজন্যে কত নতুন শিল্পী এলাকায় তৈরি হয়েছেন। তবে আগের মতো বোমা, গুলি এই এলাকায় চলে না। এখন শান্তি রয়েছে।