গত ১১ এপ্রিল থেকেই শুরু হয়ে গেছে লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু উপত্যকায় এই মুহূর্তে প্রবল মোদী বিরোধী হাওয়ায় খাদের কিনারে চলে গেছে গেরুয়া শিবির। অবস্থা এখন এমনই যে ভূস্বর্গ কাশ্মীর এখন ক্রমেই জাহান্নমে পরিণত হচ্ছে বিজেপির কাছে। জানা গেছে, পুলওয়ামা কান্ডের পর সামরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রবি ও বুধবার ভোর চারটে থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ব্যবহার করতে পারেন না সাধারণ নাগরিকরা। এই নিয়ে গত দু’সপ্তাহ ধরে কাশ্মীরে ছিল ছাই চাপা আগুন। রবিবার তাতেই ঘি পড়েছে। সেনা কনভয় চলাকালীন রাস্তায় আটকে দেওয়া হয় এক অ্যাম্বুল্যান্স। যার জেরে মৃত্যু হয় ক্যান্সারে আক্রান্ত এক রোগীর। তারপর থেকে ক্রমাগত বিজেপির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির মতো দুই শক্তিশালী আঞ্চলিক দল। এই পথে তাদের অক্সিজেন দিচ্ছে মঙ্গলবারের এক ঘটনা। ভোটের কাজে ভেসু যাচ্ছিলেন দুরু অঞ্চলের সার ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রসুল ওয়ানি। যিনি দক্ষিণ কাশ্মীর এলাকার অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার। সেই সময় তাঁর গাড়িকে হাইওয়েতে থামানো দায়িত্বে থাকা জওয়ানরা। অভিযোগ তাঁদের মারধর করা হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি স্থানীয় থানায় এফআইআর করেন।
শাঙ্গুসে নির্বাচনী প্রচারের পর পিডিপি প্রধান ও অনন্তনাগ কেন্দ্রের প্রার্থী মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর ক্রমশ নৈরাজ্যে পরিণত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মনে ভীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখানে জঙ্গলরাজ চলছে। এসডিএম-এর ওপরই যদি এই ধরণের অত্যাচার হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হয়রানি হচ্ছে ভেবে দেখুন।’ একই এলাকায় সভা ছিল ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি ওমর আবদুল্লার। সেই সভায় আরও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে পাওয়া গেল তাঁকে। নরেন্দ্র মােদীর উদ্দেশ্যে চৌকিদার চোর হ্যায় বলায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট ভৎসনা করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে। তাই ওমর স্লোগানটিকে একটু বদলে দেন। বলেন, ‘চৌকিদার ফেল হ্যায়।’ স্লোগানের ব্যখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা হােক বা অর্থনীতি, সব ক্ষেত্রেই মােদিজী ফেল করেছেন। উনি পাঠানকোট, পুলওয়ামা, সানজওয়ান, জম্মু বাসস্ট্যান্ড, পরপর এতগুলাে আক্রমণ হয়েছে। চৌকিদার কি তখন ঘুমাচ্ছিলেন? জিএসটি, নােটবন্সির ফলে এত মানুষের মৃত্যু। তার দায় কার?’ দায় যদিও আগেই ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন মোদী। কিন্তু তাতে কী? ওমরের সুরেই এখন গোটা ভূস্বর্গ বলছে, ‘চৌকিদার ফেল হ্যায়’