ঝাড়্গ্রাম ব্লকে দলের অর্ধেক দায়িত্ব দেওয়া হল তৃণমূল নেতা মহাশিস মাহাতোকে। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, ঝাড়্গ্রামের মানিকপাড়া, সরডিহা, চুবকা, লোধাশুলি, শালবনি, দুধকুন্ডি অঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তরুণ তুর্কি মহাশিসকে।
প্রসঙ্গত, তুখোড় সংগঠক মহাশিস সিপিএমের ঝাড়্গ্রাম জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছাড়াও ঝাড়্গ্রাম জেলার সিটু সম্পাদকের দায়িত্বও সামলেছেন মহাশিস। অবিভক্ত মেদিনীপুরের এই ছাত্র নেতা বাম জামানায় প্রধানত জঙ্গলমহলের সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। এলাকাকে চেনেন হাতের তালুর মতো। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও গোটা ঝাড়্গ্রাম থেকে একমাত্র মহাশিসই সিপিএমের টিকিটে জিতেছিলেন। ৪০-এরও নীচে মহাশিসের বয়স। এই বয়সেই এমন লড়াকু মানসিকতার কারণেই দলের নীচুতলার কর্মীদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছিলেন মহাশিস। আর মহাশিসের এই জনপ্রিয়তা দেখেই ভয় পেয়ে যান সিপিএমের কিছু নেতা। দলের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা হারানোর আশঙ্কায় ভুগতে থাকেন সিপিএম ঝাড়্গ্রামের সেক্রেটারি পুলিনবিহারি বাস্কে। আদতে আদিবাসী এই নেতার শিকড়ের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। মহাশিস প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে দেখেই শুরু হয় মহাশিসের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
এরপরেই গত ২ মার্চ ঝাড়গ্রামের গ্রাম শালবনিতে তৃণমূলের সভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে পতাকা নিয়ে মহাশিস যোগ দেন তৃণমূলে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঝাড়্গ্রামের একটি গেস্টহাউসে জেলার কোর কমিটির বৈঠকে মহাশিসকে ঝাড়্গ্রাম ব্লকের অর্ধেক দায়িত্ব তুলে দেন জেলার পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগেই মহাশিসকে দলের কাজে লাগানোর জন্য খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদাকে। তারপরেই দলের কোর কমিটির বৈঠকে অর্ধেক ঝাড়্গ্রাম ব্লকের অর্থাৎ ৬ টি অঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হল মহাশিসকে।
দরিদ্র পরিবারের মহাশিস ছিলেন সিপিএম পার্টির হোলটাইমার। কিন্তু চক্রান্ত করে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে সিপিএম। এবার তাঁকে যোগ্য সম্মান দিল তৃণমূল।