বাদশাহি রোডের পাঁচগ্রামে মানুষ ভোট নিয়ে সেভাবে মাথা ঘামান না। কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ভোট প্রচারে এসেছিলেন, কিন্তু সেখানে মানুষের তেমন কোনো উত্তেজনা নেই। এই গ্রামের মানুষ যেন নিজের মত করে থাকতে চাইছেন। তৃণমূলের উপর ভরসা করছেন। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে নয়। পাঁচগ্রামের খড়িকাডাঙা এলাকার মানুষ অধিকাংশই তুঁত চাষ করেন। স্থানীয় ভাষায় এদের বলে পলু চাষি। সাধারণ গ্রামবাসীদের দেখে মনে হল, পাঁচগ্রামের মানুষ যেন অভিজিৎবাবুকে নিয়ে তেমন উৎসাহিত নয়। তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান জেলা নেতা শ্রম দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জাকির হোসনের কাঁধে ভর করে প্রচারে নেমেছেন। তৃনমূল প্রার্থীর প্রচারে মানুষের ভিড় হচ্ছে।
গ্রামের বাসিন্দা সাদেকুল ভোটেড় প্রচারে না যাওয়ার কথা উঠতেই বলল, “কী হবে গিয়ে কর্তা? আমাদের তো কিছুই হবে না। পলু চাষিরা এ বার না খেতে পেয়ে মরবে। ভাষণ শুনে লাভ নেই। পেটে ভাত দিতে পারবে কি? শুনুন বাবু, আগেই বলে রাখি, আপনারা যাকে তুঁত চাষ বা রেশম চাষ বলে থাকেন। আমরা তাকে পলু (রেশম কীট) চাষ বলে থাকি। জানেনই তো, মুর্শিদাবাদ সিল্ক পৃথিবী বিখ্যাত। এ বার মনে হয়ে রেশম চাষই বন্ধ হয়ে যাবে। যাঁরা রেশম সুতো উৎপাদন করেন, তাঁদের কী ভাবে দিন কাটছে, কেউ খোঁজ নেয় না”।
ভোট বৈতরণী পার করতে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের মুখেও বারবারই শোনা যাচ্ছে এনআরসি-র কথা। তিনি গ্রামে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, “এখানে বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। ক্ষমতা এলে এনআরসি চালু করবে, আপনাদের তাড়িয়ে দেবে”। বিজেপির এই ধর্ম বিভাজনের রাজনীতিতে সায় দেয় না গ্রামের মানুষ। তাদের দাবি, জন্ম থেকে এখানে, বাড়িঘর, পরিবার সমস্তটাই এখানে। এখান থেকে কোথায় যাবো। আর কেনই বা যাবো? জঙ্গীপুর বিজেপির এই এনআরসি-র ব্যাপারে দিন দিন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে। এইজন্য তাঁরা তৃণমূলের উপর ভরসা করেছেন। তাঁদের ভরসা আছে মা-মাটি-মানুষের সরকারের উপর।