নোটবন্দীর পর চাকরি খুইয়েছেন ৫০ লক্ষ পুরুষ। ভোটের মধ্যেই চাকরি খোয়ানো নিয়ে সামনে এল বেঙ্গালুরুর আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাসটেনেবল ডেভলপমেন্ট থেকে প্রকাশিত এই রিপোর্ট। যা মোদী সরকারের অস্বস্তি আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। জানা গেছে, নোটবন্দীর পর থেকে গত দু’বছরে প্রায় ৫০ লক্ষ পুরুষ চাকরি হারিয়েছেন।মহিলাদের ধরলে স্বাভাবিক ভাবেই এই সংখ্যা আরও অনেকটাই বেড়ে যাবে, দাবি সমীক্ষায়।
চাকরি খোয়ানোর হারের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের হারের তুল্যমূল্য আলোচনাও করা হয়েছে নতুন সমীক্ষায়। তাতে উঠে এসেছে, ২০১১ সাল থেকেই কর্মসংস্থানের হার কমতে থাকে। নতুন এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ নতুন শতাব্দীর প্রথম দশকে বেকারত্বের হার ছিল ২ শতাংশের উপরে। ২০১১ সালে সেটা সেটা বেড়ে হয় ৩ শতাংশের বেশি। ৫ শতাংশের উপরে ছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত। কিন্তু নোটবনন্দীর পর অর্থাৎ ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের পর এই হার ৬ শতাংশেরও উপরে গিয়ে পৌঁছয়।
সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, নোটবন্দীর পর পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের উপরই চাকরিতে কোপ পড়েছে বেশি। প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন অধ্যাপক আনন্দ শ্রীবাস্তব, রোসা আব্রাহাম এবং অমিত ভোঁসলে বলেন, ‘সাধারণ ভাবে পুরুষদের চেয়ে মহিলারা বেশি ভুক্তভোগী। মহিলাদের মধ্যে বেকারত্বের সংখ্যা যেমন বেশি, তেমনই চাকরিতে অংশগ্রহণের হারও কম।’ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রে নোটবন্দির প্রভাব বেশি পড়েছে। সাধারণত, অসংগঠিত ক্ষেত্রে কম শিক্ষিতরা বেশি চাকরি করেন, এবং সংগঠিত ক্ষেত্রে ছবিটা উল্টো। এই সূত্রেই সমীক্ষায় দাবি, নোটবনন্দীর ফলে অল্প শিক্ষিতদের চাকরিতে বেশি কোপ পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর কর্মসংস্থান নিয়ে সরকারের একটি গোপন রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায়। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ সালে বেকারত্বের হার ছিল তার আগের ৪৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বেকারত্বের হার এখন ৬.১ শতাংশ। ১৯৭২-৭৩ সালের পরে আর কখনই এত মানুষ বেকার ছিলেন না। এই রিপোর্টটি সরকার প্রকাশ করতে চায়নি। কিন্তু গোপন সূত্রে তা একটি সংবাদপত্রের হাতে আসে।