চলতি আইপিএলে দুর্দান্ত শুরু করেছিল কলকাতা। কিন্তু মাঝপথে আচমকাই থেমে গেল নাইট বাহিনীর দৌড়। পরপর টানা তিন ম্যাচে হারল কলকাতা। কিন্তু এই হারের হ্যাটট্রিকের কারণ কি? অতিরিক্ত রাসেল নির্ভরতা নাকি চোট?
গতকালও চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয় হাতছাড়া হয়েছে কেকেআর-এর। প্রথমত কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং শক্তি খুব একটা ভাল কাজ করছে এমনটা নয়। কোনও ম্যাচে কুলদীপ ভাল খেলছেন, কোনও ম্যাচে হ্যারি গার্নি, কখনও বা সুনীল নারাইন। বোলিং স্তম্ভের প্রত্যেকেই ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেললে এতটা সমস্যায় পড়তে হত না।
দলে ভাল কোনও পেসার না থাকাটা কেকেআরের পিছিয়ে যাওয়ার বড় কারণ। চোট সমস্যাতেও ভুগতে হয়েছে দলকে। শুরুতে নতুন বলে উইকেট তুলে নিতে পারবেন, এমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। সমস্যা হচ্ছে স্পিনারদেরও। যে পিচে সুনীল নারাইন এত ভাল বল করলেন, সেখানে সাফল্য পেলেন না আর কোনও স্পিনারই। শেষ দু’ওভারে ২৪ রান আটকাতে পারেননি গার্নি-পীযূষরা।
আন্দ্রে রাসেলের চওড়া ব্যাটে ভর করে একের পর জয়ের মুখ দেখেছে তাঁরা। তিনি ব্যর্থ হলেই ভেঙে পড়েছে দল। অতিরিক্ত রাসেল নির্ভরতায় ভুগছে নাইট বাহিনী। রাসেল ব্যর্থ হলেই আর সে ভাবে রান উঠছে না। চার নম্বরে বা তিন নম্বরে হোক নীতীশ রাণা প্রথম দিকে ভাল খেললেও শেষ কয়েকটি ম্যাচে একেবারেই রান পাননি।
অধিনায়ক হিসাবে দীনেশ কার্তিক শেষ কয়েকটা ম্যাচে একেবারেই ব্যর্থ। দল সাজাতে ভুল হয়ে যাচ্ছে। গোটা দলে ধারাবাহিকতার অভাব একটা বড় সমস্যা। শৃ্ঙ্খলার অভাবও রয়েছে খানিকটা। একটু অগোছালো মনে হয়েছে নাইটদের। রবিবারের ইডেন গার্ডেন্সে লেখা থাকল এক অন্য ইতিহাস। যে ইতিহাস অনেক বছর পর বলবে, বাঙালির নববর্ষের আগের রাতে এই মাঠ পেয়েছিল এক অন্য নায়ককে। মহেন্দ্র সিং ধোনি, আন্দ্রে রাসেল যুদ্ধের যাবতীয় লড়াই, আবেগ যিনি ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন নিজের দিকে। এমনকী, কর্পোরেট গ্যালারিতে বসে থাকা শাহরুখ কিং খানও হারিয়ে গিয়েছিলেন ইমরান তাহিরের ছটায়।
ধোনির চেন্নাইয়ের সঙ্গে এই ম্যাচটা তো শুধু নিছক একটা ম্যাচ নয়। এই ম্যাচ ছিল আভিজাত্যের। এই ম্যাচ ছিল প্রতিশোধের। চেন্নাইয়ে নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন কার্তিকরা। ঘরের মাঠে কিছুটা সম্মান ফিরিয়ে নেওয়া যেত। হল না। ঠিক যে ভাবে এই প্রথম, প্রথম ওভারেই মাঠে ঢুকেও গ্যালারির দখল নিতে পারলেন না শাহরুখ খান। অসহায় হয়ে দেখলেন, কলকাতা কী ভাবে চলে গিয়েছে ধোনির দখলে। ধোনি এ দিন তেমন কিছু করেননি। ১৩ বলে ১৬ রান মাত্র। তা-ও তিনিই জিতলেন হৃদয়। ঠিক সময়ে তাহিরকে দিয়ে রাসেলকে তুলে নেওয়ায় ফের প্রতিষ্ঠিত ধোনিবাদ।