আগামীকাল থেকে শুরু হতে চলেছে লোকসভা ভোট। কিন্তু এই মুহূর্তে গোটা উত্তরপ্রদেশে বেকায়দায় গেরুয়া শিবির। গোটা যোগী রাজ্যেই বইছে বিজেপি বিরোধী হাওয়া, যার ফলে সেখানে বিজেপি প্রার্থীদের নিয়ে কোনও উন্মাদনাই চোখে পড়ছে না। বিজেপির দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন রাজ্যের বাসিন্দারাও। যেমন সাহারানপুরের পেট্রোল পাম্প কর্মী সৎবীর যাদব বলেন, ‘আমি নরেন্দ্র মোদীকে গতবার ভোট দিয়েছিলাম। অথচ মোদীর নাম করে যিনি এখানে জিতেছিলেন, তাকে পরে আর দেখা যায়নি!’
প্রায় একই সুর শােনা যাচ্ছে মুজফফরনগর, বাগপত, কৈরানা, গাজিয়াবাদের বাসিন্দাদের মুখেও। যাঁরা প্রত্যেকেই প্রথম দফার নির্বাচনে ভোট দেবেন। ১১ এপ্রিল উত্তর প্রদেশের ৮ আসনে ভোট হচ্ছে। আরএসএসের চাপে পড়ে মুজফফরনগরে গত বারের সাংসদ সঞ্জীব বালিয়ানকে এবারও প্রার্থী করতে হয়েছে। ফলে উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের অন্য সাংসদদের প্রার্থী রাখতে হয়েছে। ২০১৩-য় মুজফফরনগর দাঙ্গার মূল অভিযুক্ত সঞ্জীব বালিয়ান। যিনি মোদী-ঝড়ে ২০১৪-য় ৪ লাখের বেশি ভোটে জিতেছিলেন।
রাজ্যে বিজেপির বড় মাথাব্যথা এখন জাঠেদের ক্ষোভ। পাশাপাশি মুসলিম, দলিত ও অন্য পিছিয়ে-পড়া সম্প্রদায়ের ভোটে মহাজোটের পক্ষে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। দিল্লী-মুজফফরনগর জাতীয় সড়কে একটি খাবারের দোকান চালান রবীন্দ্র আহলাওয়াত। রাষ্ট্রীয় লোকদল প্রধান চৌধুরি অজিত সিংয়ের সমর্থক। তিনি বলেন, ‘জাঠদের ক্ষোভ মূলত তিনটি। এক, কেন্দ্র আমাদের নেতাকে দিল্লীর সরকারি বাংলাে ছাড়তে বাধ্য করেছে। দ্বিতীয়ত, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার আখচাষীদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়নি। তৃতীয়ত, ইউএসএ জাঠদের সংরক্ষণের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বর্তমান সরকার গুরুত্ব দেয়নি।’
উল্লেখ্য, দিল্লীর মসনদ থেকে বিজেপিকে হঠাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একের বিরুদ্ধে এক ফর্মুলা মেনেই উত্তরপ্রদেশে মহাজোট গড়েছে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও রাষ্ট্রীয় লোকদল। যাতে কোনও ভাবেই বিরোধী ভোট ভাগ না হয়ে যেতে পারে। ফলে এমনিতেই চাপে বিজেপি। তার ওপর বিভিন্ন সমীক্ষার ফলাফলই যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। যেমন ইন্ডিয়া টুডে-কার্ভির করা এক প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষায় জানা গেছে, ২০১৪ সালের নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ও তার জোটসঙ্গীদের জেতা ৭৩টি আসনের মধ্যে এবারে বিজেপি পেতে পারে মাত্র ৫টি আসন। ফলে সবমিলিয়ে যোগীর রাজ্যে এবার ভরাডুবির পথে পদ্ম।