রাজ্যের শাসক দল যখন রানাঘাটে জোরকদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছে তখনও প্রার্থী বাছাই করে উঠতে পারেনি বিজেপি। অবশেষে ২৬ মার্চ ডাঃ মুকুটমণি অধিকারীর নাম যখন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তখন অনেকটা দেরি হয়ে যাওয়ায় এমনিতেই ব্যাকফুটে বিজেপি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। বিজেপি নেতা-কর্মীদের মনে যে আশঙ্কা ছিল এবার সম্ভবত সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। নদিয়ার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে ডঃ মুকুটমণি অধিকারী শেষপর্যন্ত ভোটে দাঁড়াতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
নিয়মানুযায়ী, সরকারি হাসপাতালের কোনও ডাক্তার তাঁর চাকরিতে ইস্তফা না দিয়ে ভোটে দাঁড়াতে পারেন না। যদিও প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার একদিন পরেই মুকুটমণি তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর অবধি মুকুটমণি অধিকারীর ইস্তফাপত্র গ্রাহ্য করা হয়নি। যদিও তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করে তাঁকে যাতে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তার জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও দল চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন মুকুটমণি অধিকারী নিজেই। তবে শেষপর্যন্ত তা গ্রাহ্য হবে কিনা, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাদকুল্লা হাসপাতালের ডাক্তার মুকুটমণি অধিকারী তাঁর ইস্তফার জন্য গত ২৮ মার্চ আবেদন করেন। তাঁর ইস্তফাপত্র হাঁসখালি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সেই আবেদন গ্রহণ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী বলেন, আমি পেশায় একজন সরকারি চিকিৎসক। গত বছর ১৪ আগস্ট আমি চাকরি জীবনে প্রবেশ করি। কিন্তু নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় কোনও ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। সেক্ষেত্রে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে নির্বাচনী বিধিতে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও চিকিৎসকের চাকরির সময়সীমা অন্তত পাঁচ বছর পূর্ণ না হলে তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রাহ্য করা হয় না। সে ক্ষেত্রে মুকুটমণি অধিকারীর চাকরির সময়সীমা খুবই কম। এদিকে, ২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার কাজ। আগামী ৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এর মধ্যে বিজেপি প্রার্থী চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে না পারলে, তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে এর মধ্যে মুকুটমণি অধিকারীর ইস্তফাপত্র গ্রাহ্য না হলে সেক্ষেত্রে বিজেপিকে রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না। যা নিয়ে এই মুহূর্তে বেজায় অস্বস্তিতে রাজ্যের গেরুয়া শিবির।