ভোটের মুখে পুলিশকর্তাদের বদলিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনায় কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই চিঠিতে বদলির সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করে দেখার জন্য কমিশনকে অনুরোধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে, কার নির্দেশে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা তদন্ত করে দেখারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ওই চিঠিতে মমতা লেখেন, ‘কমিশনের এই সিদ্ধান্ত খামখেয়ালি শুধু না, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পক্ষপাতদুষ্ট। বিজেপি-র পক্ষ নিয়ে যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে’। মমতার অভিযোগ, ‘কদিন আগে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি নেতারা বলেছিলেন রাজ্যের সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের খুব শিগগির বদলি করে দেবে নির্বাচন কমিশন। তার পর গতকালই (শুক্রবার) একটি টিভি শো-তে প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি প্রার্থী বলেছেন, বাংলায় আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভাল নয়, সে জন্যই সেখানে সাত দফায় ভোটের আদেশ দেওয়া হয়েছে।‘ তৃণমূলনেত্রীর অভিযোগ তার পর পরই, বাংলার চার পুলিশ অফিসারকে বদলির নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। তাঁর কথায়, ‘এই সব ঘটনা পরম্পরা থেকে কমিশনের কাজকর্ম নিয়ে ঘোর সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। তারা কি সাংবিধানিক নিয়ম মেনে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করাতে চাইছে, নাকি বিজেপি-কে খুশি করে চলতে চাইছে’।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কলকাতা ও বিধাননগরে বহু ভাষাভাষি মানুষ থাকেন। সেখানকার কমিশনার হিসাবে অনুজ শর্মা ও জ্ঞানবন্ত সিংহ অত্যন্ত পারদর্শিতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাচ্ছিলেন। ভোটের আগে প্রচুর নগদ টাকা, সোনা, মদ আটক করা হয়েছিল তাঁদের নেতৃত্বে। কিন্তু তাঁদের পরিবর্তে যে দুই অফিসারকে কমিশনার করা হল, তাঁদের এই দুই এলাকা ও এখানে বসবাসকারী মানুষদের সম্পর্কে কোনও ধারনাই নেই।
এ কথা বলেই মমতা প্রশ্ন করেন, ‘তা হলে কি রাজনৈতিক প্রভুকে খুশি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? এর পরে কলকাতা ও বিধাননগরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কোনও সমস্যা হলে কমিশন তার দায় নেবে তো?’
মুখ্যমন্ত্রীর এও অভিযোগ, ‘অফিসারদের বদলির আগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেনি কমিশন। কিন্তু এ ধরনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত বলে নবান্ন মনে করে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার অফিসারদের একটি প্যানেল তৈরি করে দেবে। তার মধ্যে থেকে যেন অফিসার বেছে নেয় কমিশন’। সার্বিক ভাবে এই ক্ষোভ জানিয়ে মমতা দাবি করেছেন, ‘কমিশন যেন তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখে’।
