মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। নতুন নতুন পর্যটন সেক্টর তৈরি করেছেন তিনি। বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজোকে বিশ্বের বাজারে তুলে ধরতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। তাঁর উদ্যোগে দুর্গা কার্নিভাল শুরু হয়েছে। যেখানে কলকাতার সেরা পুজোগুলি তাঁদের প্রতিমা ও মণ্ডপের রেপ্লিকা নিয়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।তাঁর জন্যেই ইউনেস্কোর বিচারে বিশ্বের সংস্কৃতি বিভাগের তালিকায় নাম উঠে গেল বাঙালির দুর্গোৎসবের৷ ২০২০ সালের জন্য তৈরি হচ্ছে এই তালিকা৷ তাতে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন পেল শারদোৎসব৷
প্রতি বছরই ইউনেস্কোর তরফে বিশ্ব সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলির উপর নজর দেওয়া হয়৷ ঐতিহ্যের তালিকায় নতুন নতুন সংযোজন হয়৷ সেভাবেই ভারতের বেশ কয়েকটি উৎসব নিয়ে চর্চা হয়েছে ইউনেস্কোর অন্দরে৷ সবকটাকে হারিয়ে বাজিমাত করেছে বাঙালির দুর্গাপুজোই৷ আগামী বছর থেকে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের তালিকায় আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন নাম হিসেবে সংযোজিত হবে দুর্গাপুজো৷
সূত্রের খবর, দুর্গাপুজো নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে ইউনেস্কো কর্তারা এর ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’ – এই বিষয়টিতেই মজেছেন৷ তাঁদের মতে, একটি উৎসবের মধ্যে এত রকমারি সংস্কৃতির মেলবন্ধন সচরাচর দেখা যায় না৷ ভারতে এই নির্বাচন, মনোনয়নের বিষয়টির দায়িত্ব থাকে কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে থাকা স্বশাসিত সংস্থা সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির উপর৷ অ্যাকাডেমির কর্তারা এমনিতে বাংলার দুর্গাপুজোর সঙ্গে পরিচিত৷ তবে সব উৎসবের মধ্যে থেকে বিচার করাটা কিছুটা কঠিন৷ তবে সেই কঠিন পরীক্ষাতেও সহজেই উতরে গিয়েছে শারদোৎসব৷ চুলচেরা বিশ্লেষণেও পরীক্ষকদের মন জয় করেছে বাংলার ঘরে ঘরে দেবী বন্দনার সুর৷
অ্যাকাডেমির ৫ সদস্যের গবেষক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক তপতী গুহঠাকুরতার কথায় ‘কলকাতার দুর্গাপুজো ইদানিং আলাদা এক শিল্পমাত্রা যোগ করেছে৷ অন্য কোনও উৎসব এভাবে ঐতিহ্য বজায় রেখে আধুনিকতার সংমিশ্রণে উত্তরোত্তর আকর্ষণের পথে যায়নি৷ আর এটাই দুর্গাপুজোকে একেবারে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে৷ তাই সবার সেরা আমাদের দুর্গাপুজো৷’