গত ১০ মার্চ জাতীয় নির্বাচনের তরফে ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দেশজুড়ে লাগু হয়ে গেছিল আদর্শ আচরণবিধি। এবং তারপর থেকেই নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে একের পর এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। বাদ যাননি খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তবে এবার আর কোনও নেতা-মন্ত্রী নয়, ভোটের মুখে মোদী-প্রশস্তি করে নির্বাচন বিধি ভঙ্গের দায়ে পড়লেন রাজস্থানের রাজ্যপাল কল্যাণ সিংহ। গত ২৩শে মার্চ উত্তর প্রদেশের আলিগড়ে রাজস্থানের রাজ্যপাল মন্তব্য করেন, দেশের সবাই নরেন্দ্র মোদীকেই আরও একবার প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে দেখতে চান। দেশের জন্য মোদীকেই দরকার বলেও মন্তব্য করেন কল্যাণ সিংহ।
শুধু তাই নয়। এখানেই না থেমে রাজস্থানের রাজ্যপাল নিজেকে বিজেপির ‘কার্যকর্তা’ বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘একজন বিজেপি কর্মী হিসেবে আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর পুনর্নির্বাচন জরুরি!’ কল্যাণ সিংয়ের এমন মন্তব্যের পরেই সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিরোধীরা। নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশজুড়ে। রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক পদাধিকারী হয়েও কীভাবে কোনও দল বা নেতার সমর্থনে এমন মন্তব্য করতে পারেন কল্যাণ সিংহ তাই নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
ইংরেজি সংবাদপত্র ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এর রিপোর্টের ভিত্তিতে, নির্বাচন কমিশন উত্তর প্রদেশের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট তলব করে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মঙ্গলবার কমিশন জানায়, রাজস্থানের রাজ্যপাল নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। সূত্রের খবর, বিষয়টি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নজরে আনতে চিঠিও দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখ্য, এর আগে, ১৯৯৩ সালে হিমাচল প্রদেশের তৎকালীন রাজ্যপাল গুলশন আহমেদ তাঁর পুত্র সৈয়দ আহমেদের হয়ে মধ্য প্রদেশে নির্বাচনী প্রচার করে কমিশনের কোপে পড়েছিলেন। রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন গুলশন আহমেদ। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন হল যে কোনও রাজ্যপাল নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের দায়ে পড়লেন। জানা গেছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের আলিগড় কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন সতীশ গৌতম। কিন্তু বিজেপি সাংসদকে দ্বিতীয়বার প্রার্থী করায় বিজেপির অন্দরেই চলছে ব্যাপক গোষ্ঠীকোন্দল। এই প্রেক্ষিতেই আলিগড়ে এমন মন্তব্য রাজস্থানের রাজ্যপালের। তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেদিকেই এখন চোখ রাখছে বিরোধীরা।