এবারের লক্ষ্য দিল্লীর মসনদ থেকে সাম্প্রদায়িক মোদী সরকারকে হঠানো। তাই রাজ্যে প্রচার শুরুর আগেই দেশের শীর্ষ নেতাদের ডাকে জাতীয় স্তরে তাঁর প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর আমন্ত্রণে রবিবারই বিশাখাপত্তনম উড়ে গিয়ে সেখানের বিজেপি বিরোধী সভায় তেলুগু জনতাকে মাতিয়ে এসেছেন তিনি। আর এবার নিজের রাজ্যে প্রচারের কাজে ঝাঁপাচ্ছেন মমতা। আগামীকাল, ৩ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জনসভা করবেন তৃণমূল নেত্রী।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম সভা কোচবিহারের দিনহাটায়। এরপর ৪ এপ্রিল মাথাভাঙায় জনসভা করবেন তিনি। ঘটনাচক্রে, ৩ এপ্রিল দিনহাটায় যেদিন মমতার সভা, সেদিনই উত্তরবঙ্গে জনসভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উল্লেখ্য, এবারই প্রথম আসামে ৯টি লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে। তাই ৫ এপ্রিল দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে আসামের ধুবড়িতে সভা করতে যাবেন মমতা। সেখানে তিনি গোটাদুয়েক সভা করবেন।
ধুবড়ি থেকে ফিরে আবারও তিনি প্রচারে ঝড় তুলবেন উত্তরবঙ্গে। ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে সেই প্রচার। অবশেষে ১৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীর কলকাতায় ফেরার কথা। বাংলায় তিনি অন্তত ১০০টি সভা করবেন বলে জানা গেছে। প্রায় সবকটি জায়গাতে হেলিকপ্টারেই যাতায়াত করবেন তিনি। তবে আসামের পর অন্য রাজ্যে তাঁর পক্ষে আর যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই মোবাইলেই নিজের বক্তব্য পেশ করবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পর থেকেই উত্তরবঙ্গ জুড়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। রাজ্যের প্রথমদফার ভোট উত্তরবঙ্গের দু’টি আসনে। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে ইতিমধ্যেই প্রার্থীরা কর্মীসভা, পথসভা ও মিছিল-মিটিং শুরু করে দিয়েছেন। ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হবে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জ কেন্দ্রে। ওই আসনগুলির জন্যও প্রচার শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। এবং প্রচারের বহরে প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থীরা।
এর আগের বিজেপি বিরোধী সভাগুলির মতো বিশাখাপত্তনমের সভাতেও মমতা ‘মোদী হঠাও’-এর ডাক দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, ‘আর কয়েকদিন পরেই দিল্লী থেকে বিদায় নেবে বিজেপি। দেশে নতুন সরকার হবে। অভিন্ন কর্মসূচিও তৈরি করা হবে।’ বাংলায় প্রচারের সময়ও যে তাঁর আক্রমণের মূল লক্ষ্য হবে মোদী-শাহেরা, তা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে এবার কোচবিহার থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ার থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দশরথ তিরকে, জলপাইগুড়ি থেকে বিজয়চন্দ্র বর্মন এবং দার্জিলিং থেকে দাঁড়িয়েছেন অমর সিং রাই।