ছোটবেলায় ফুটবলই ছিল প্রথম ভালবাসা। কিন্তু সুব্রত কাপের যোগ্যতা–অর্জনপর্বে খেলতে গিয়ে ডান পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ফলে আর ফুটবল মাঠে ফেরা সম্ভব ছিল না তাঁর। তখনই আসা অ্যাথলেটিক্সে। তিনি ডঃ কুন্তল রায়। অ্যাথলেটিক্সে যিনি পেয়েছেন দ্রোণাচার্য পুরস্কারও। পল্লব শূর, দীপক ব্যানার্জি, সমীর পাল, সোমনাথ রায়, অলোক দাশগুপ্ত, কমলেশ সরকার, কুন্তল রায় প্রমুখের হাতে গড়া এসিসি–র বয়স ৫০ হচ্ছে আর তিনদিন পর ৪ এপ্রিল। এসিসি ৫০–এর অনুষ্ঠান শুরু হবে ৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার। সকালে ক্লাব পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। তবে নানা কারণে সেদিন ওই ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক প্রিমিয়ার রিলে রেস করা যাচ্ছে না। যা হবে পরে। কিন্তু বৃহস্পতিবার হবে অনূর্ধ্ব ১২–দের সাব জুনিয়র রিলে রেস। হবে ছেলে ও মেয়েদের হ্যান্ডবল খেলাও।
সোদপুরে বাড়ির পাশে সঙ্গীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন একটি ক্লাব। অ্যাথলেটিক কোচিং ক্যাম্প (এসিসি)। যার যাত্রা শুরু ৪ এপ্রিল, ১৯৬৯। সেই এসিসি–র শিক্ষার্থীদের সাফল্য এখন আকাশছোঁয়া। ওখানকার তিন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন বিশ্ব ক্রীড়ার সর্বোচ্চ মঞ্চ অলিম্পিকে। হেপ্টাথলনে সোমা বিশ্বাস অংশ নিয়েছেন দুটি অলিম্পিকে, ২০০০ ও ২০০৪ সালে। সোমা পরপর দুটি এশিয়ান গেমসে (২০০২ ও ২০০৬) হেপ্টাথলনে রুপো জিতেছেন। সঙ্গে ২০০২ সালের এশিয়ান গেমসে রিলের সোনা। সঞ্জয় রাই লং জাম্পে অংশ নিয়েছেন ২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকে। ওখানকার আর এক অলিম্পিয়ান সুস্মিতা সিংহরায়। যিনি ২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিকে হেপ্টাথলনে ভারতের প্রতিনিধি ছিলেন। এশিয়ান গেমস, এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েনথ গেমসেও সুস্মিতা অংশ নিয়েছেন। সেই ধারাটা এখনও বজায় রয়েছে।
এত সাফল্যেও পুরোপুরি তৃপ্ত নন ডঃ কুন্তল রায় এত সাফল্যের পরেও পুরোপুরি তৃপ্ত নন। কারণ, অনেক কিছু করার পরিকল্পনা থাকলেও সব এখনও করে উঠতে পারেননি টাকার অভাবেই। না করতে পারার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হল সুইমিং পুল। এসিসি–র মাঠের এক পাশেই রয়েছে ছোট পুকুর। ওটাকেই সুইমিং পুলে পরিণত করার পরিকল্পনা অনেক দিনের। কিন্তু টাকার অভাবেই এখনও পর্যন্ত তা পুরোপুরি কার্যকর করে ওঠা যায়নি। পরিকল্পনা রয়েছে স্থায়ী ভাবে স্পোর্টস হস্টেল গড়ার। যাতে দূরের শিক্ষার্থীরা ওখানে থেকে অনুশীলন করতে পারেন। পরিকল্পনা রয়েছে স্পোর্টস লাইব্রেরি ও ক্রীড়া সংগ্রহশালা গড়ারও। এ ব্যাপারে পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন ঘোষ উদ্যোগ নিয়ে পুকুরের পাড় বাঁধাই করে দিয়েছিলেন। কর্তারা আশায় আছেন, একদিন ওটা সুইমিং পুলের আকার নেবে।