তিনি শ্রীকৃষ্ণের গোপী, মানুষ তাঁকে এভাবেই চেনেন এবং ভালবাসেন। সেই টানেই নাকি হেমা মালিনী বারেবারে মথুরায় ফিরে আসেন। তবে এই মথুরার জন্যে সাংসদ হিসাবে কি কি কাজ করেছেন, তা মনেই করতে পারলেন হেমা!
মথুরাবাসী তাঁকে বহিরাগত বলেই ভাবে। কারণ মথুরাতে তাঁর দেখা মেলা দুষ্কর। সপা স্পষ্টত বলে দিয়েছে লড়াই হবে বহিরাগত বনাম ব্রজবাসীর। যদিও তাতে দমেননি হেমা, হেমার পাল্টা, ‘হ্যাঁ আমার মুম্বইয়ে বাড়ি আছে। তাতে সমস্যা কোথায়? বৃন্দাবনেও বাড়ি আছে। সুতরাং আমি বৃন্দাবনবাসীও।’
হেমার বক্তব্য আড়াইশোবার নাকি তিনি এসেছেন মথুরায়। বৃন্দাবনে থেকেছেন ৩–৪ দিন। প্রচুর কাজ করেছেন। অথচ কী কাজ করেছেন, তার ফিরিস্তি দিতে পারলেন না সাংসদ হেমা মালিনী! বারবার চেষ্টা করেও, মনে পড়ল না। শুধু বলে গেলেন অনেক করেছেন। মথুরা থেকে আরও একবার প্রার্থী করায় দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে নিজেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানে মথুরার জন্য কত কাজ করেছেন, একতরফা বলে যান। কী কী কাজ? প্রশ্ন করতেই অপ্রস্তুত হেমা। বললেন, এত করেছেন, যে মনেই পড়ছে না! যোগ করলেন, মথুরা বিরাট শহর। ৩ হাজার বর্গ কিমি জুড়ে। তাতে ১ হাজার গ্রাম। ফলে কেন্দ্রে প্রতিটি ভোটদাতাকে খুশি করা অসাধ্য।
এরকমই অনেক পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করেছেন হেমা। কোনও সরকারি অনুষ্ঠানেই তাঁকে পাওয়া যায় না। এর জবাবে আরও বেফাঁস কথা বললেন স্বপ্নসুন্দরী। জানালেন, তাঁর কেন্দ্র অতি পবিত্র, ধার্মিক স্থান। প্রায় রোজই কোনও অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। সবেতে হাজিরা দেওয়া অসম্ভব। বলেছেন, ‘তাছাড়া মানুষ বোঝেন আমি নিতান্তই সাংসদ নই। অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী। আমার পক্ষে এখানে ২৪ ঘণ্টা পড়ে থাকা সম্ভব নয়। ১০ দিনের জন্য এসেও সব কাজ করে দিতে পারি।’
যদিও সাধারণ মানুষ কার্যত বিরক্ত তাঁকে নিয়ে। গত ৫ বছরে কোনও কাজই করেননি তিনি। তাঁকে পাওয়া যায়নি কোনও সমস্যার সমাধানে। সপা সভাপতি অখিলেশ যাদব বলেন, ‘বিকাশ গায়েব হ্যায়’। সেই প্রসঙ্গে তাঁর পাল্টা, ‘অখিলেশ নিজেই এসে দেখে যান বিকাশ অর্থাৎ উন্নয়ন হয়েছে কি না। মথুরা তো খুব বড় কেন্দ্র নয়!’ আবারও সামাল দিতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘মানে সারা দেশের তুলনায় মথুরা তো অতি ক্ষুদ্র জায়গা।’ নিজের সাফাই দিয়ে জানিয়েছেন, পাঁচ বছর খুবই কম সময়। এর মধ্যে মথুরার ভোল পাল্টানো সম্ভব নয়। হেমার এই হাস্যকর মন্তব্যে আবারও প্রমাণিত হল মানুষের কাজে মন নেই গেরুয়া শিবিরের, সবাই সবার আখের গোছাতে ব্যস্ত।