হাতে বাকি আর মাত্র দু’সপ্তাহ। তারপরেই দেশজুড়ে শুরু হতে চলেছে লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু এখনও প্রার্থী বাছাই ও দলের গোষ্ঠীকোন্দল সামাল দিতেই বেকায়দায় গেরুয়া শিবির। তার ওপর এবার টিকিট না পাওয়ায় মোদী-শাহের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন দলের প্রয়াত সাংসদ হুকুম সিংয়ের মেয়ে মৃগাঙ্কা সিং!
প্রসঙ্গত, দলের সাংসদ হুকুম সিংয়ের অকাল প্রয়াণের পর তাঁর মেয়ে মৃগাঙ্ক সিংকে দিয়ে ভাগ্য পরীক্ষা করেছিল বিজেপি। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কৈরানা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিরোধী জোটের কাছে মৃগাঙ্কা খড়কুটোর মতো উড়ে যান। গত বছর পারেননি। আশা করেছিলেন, পার্টি এবার তাঁকে টিকিট দেবে। দলের প্রত্যাশা মেটাবেন। কিন্তু সে গুড়ে বালি। এবার তাঁর নাম তালিকা থেকে লাল কালি দিয়ে কেটে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর স্থানে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি নেতা প্রদীপ চৌধুরীকে।
দলের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না হুকুম সিংয়ের মেয়ে। তিনি সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। সবটাই হয়েছে দলীয় নেতাদের ষড়যন্ত্রে বলে অভিযোগ করেছেন মৃগাঙ্কা সিং। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যাঁরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন, তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য, বেটি হঠাও, অস্তিত্ব মিটাও। মোদী সরকারের ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’কে ব্যবহার করে এভাবেই নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন মৃগাঙ্কা। বাবার পুরনো কেন্দ্রে তাঁকে ফের প্রার্থী করা হবে ধরেই নিয়ে একপ্রকার প্রচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ায় রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন তিনি।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিনের বিধায়ক হুকুম সিং ২০১৪ সালে প্রথমবার লোকসভায় পৌঁছন। সেই প্রসঙ্গ তুলে মৃগাঙ্কা বলেন, আমার বাবা ৪৫ বছর কৈরানায় রাজত্ব করেছেন। কিন্তু আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল। গতবছর উপনির্বাচনে আমি ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম। এবছর জয় নিয়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম। যদিও, গত বছর বাবার মৃত্যুর পর কৈরানার উপনির্বাচনে রাষ্ট্রীয় লোক দলের প্রার্থী তবসুম বেগমের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন মৃগাঙ্কা সিং। তবসুমকে সমর্থন করেছিল বহুজন সমাজবাদী পার্টি এবং সমাজবাদী পার্টি। এই একই নীতিতে গোরক্ষপুর এবং ফুলপুরে পরাজিত হয়েছিল বিজেপি।
এবারও একই ফর্মুলা অবলম্বন করেছেন মায়াবতী এবং অখিলেশ সিং যাদব। বিরোধীদের শক্তিশালী জোটকে প্রতিহত করতে শাহের কথা মতো কোনও নীতি-আদর্শের তোয়াক্কা করছে না গেরুয়া শিবির। সে কারণেই মৃগাঙ্কাকে সরিয়ে প্রাক্তন এসপি এবং কংগ্রেস নেতা প্রদীপ চৌধুরীর ওপর ভরসা রাখছে বিজেপি।