আগামী ১১ এপ্রিল শুরু হতে চলেছে দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচন। হাতে বাকি আর মাত্র ১৫ দিন। কিন্তু এখনও প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে ল্যাজেগোবরে অবস্থা বিজেপির। দিনকয়েক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হওয়া এক দেওয়াল লিখনের ছবিতে দেখা গেছিল, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটা গরুকে ধরে টানছেন, কারণ তিনি ওই গরুকে প্রার্থী করতে চান৷ তবে গোরুকে প্রার্থী করা না হলেও গোরুখোঁজা খোঁজার পর এক পুরোহিতকেই প্রার্থী করল বিজেপি! যিনি আবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাড়ির পুরোহিত! শুনতে অবাক লাগলেও, এবার বহরমপুর লোকসভা আসন থেকে বিজেপির হয়ে লড়ছেন কৃষ্ণ জোয়ারদার আর্য। পেশায় পুরোহিত আর্য রাজনীতির আঙিনায় একেবারেই নতুন মুখ৷
জানা গেছে, মাস দুয়েক আগে দিলীপ ঘোষের বাড়িতে যজ্ঞ করেছিলেন কৃষ্ণ জোয়ারদার আর্য। দলের একাংশের দাবি, সেই সুবাদেই নাকি টিকিট পেয়েছেন তিনি৷ বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি গৌরিশঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, প্রার্থীকে ঠিকমতো চেনেন না তিনি। মোদ্দা কথা, এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই গেরুয়া শিবিরে তৈরি হয়েছে উষ্মা৷ দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে কাজ করেও যোগ্য নেতাদের প্রার্থী করা হয়নি বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠে গেছে। ফলে ২২ থেকে ২৩টি আসন দখল করার দাবি করলেও পরিস্থিতি খুব সুবিধের নয় পদ্মশিবিরে৷ উল্লেখ্য, কোচবিহার থেকে তৃণমূল থেকে ঘাড়ধাক্কা খাওয়া নেতাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এ নিয়ে দলের অন্দরেই উঠেছে হাজারো প্রশ্ন। দেখা দিয়েছে তীব্র বিবাদ৷
কোচবিহারে নিশীথ প্রামাণিককে প্রার্থী করা নিয়ে বেনজির কোন্দল দেখা দিয়েছে দলের অন্দরে৷ পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে শেষমেশ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে হয় রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ তাবড় নেতাদের৷ এহেন পরিস্থিতিতে কৃষ্ণ জোয়ারদার আর্যকে প্রার্থী করা নিয়ে দলের গোষ্ঠী কোন্দল ফের তুঙ্গে উঠবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল৷ শুধু তাই নয়, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকেও কংগ্রেস ফেরত নীলাঞ্জন রায়কে প্রার্থী করা নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা বিজেপির সভাপতি সুফল ঘাঁটু জানান, প্রার্থী বদলের দাবিতে তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রার্থী বদলের দাবি করবেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, ‘পুরোহিত’ আর্য বা ‘গরুচোর’ নিশীথ প্রামাণিককে প্রার্থী করা হলে কী ভোটারদের আস্থা পাওয়া যাবে? আর দীর্ঘদিনের দলীয় কর্মীদের তালিকা থেকে বাদ দিলে ঘরের ভাঙনই বা ঠেকাবে কে?