প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বরাবরই এই দাবি করে এসেছেন যে, তিনি নাকি দেশের ‘চৌকিদার’। তবে মোদীর দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ, মোদী দেশের নয়, আম্বানি-আদানিদের চৌকিদার। সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে চলা এই ডামাডোলের মধ্যেই মোদী তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে নিজের নামের আগে লিখে দেন ‘চৌকিদার’। আর তারপরই মোদীর দেখাদেখি অমিত শাহ, রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে বিজেপির সব কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাই টুইটার প্রোফাইলে নিজের নামের আগে ‘চৌকিদার’ কথাটি বসিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এবার স্বঘোষিত ‘চৌকিদার’-এর মুখোশ খুলে দিয়ে প্রকাশিত হল ‘ওয়াদা-ফরামোশি’। ভুলে যাওয়া প্রতিশ্রুতি। হিন্দিতে লেখা ১৬০ পৃষ্ঠার এই বইতে সরকারের দেওয়া তথ্য দিয়ে সরকারি প্রতিশ্রুতি ও বিভিন্ন প্রকল্পের হাল বুঝিয়ে দিয়েছেন লেখকরা।
তথ্যের অধিকার আইনে আবেদনের সূত্রে বেরিয়ে আসা তথ্যের ভিত্তিতেই মোদী সরকারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রমাণ তুলে ধরেছেন বইটির লেখক সঞ্জয় বসু, নীরজ কুমার ও শশী শেখর। মুখবন্ধ লিখেছেন প্রথম কেন্দ্রীয় মুখ্য তথ্য কমিশনার ওয়াজাহত হবিবুল্লাহ। রবিবার কনস্টিটিউশন ক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভয়ানক। হিটলারের অনুকরণে রাজত্ব চালানো হচ্ছে। কেউ প্রশ্ন করলে তাঁকে দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে।’ পরে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের জানান যে, দিল্লীতে আপ-কংগ্রেস জোটের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। কংগ্রেস আলোচনায় ডাকলে তিনি যেতে রাজি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বিজেপির স্লোগান ছিল ‘বহুত হুয়া নারী পর বার, অবকি বার মোদী সরকার’। এ প্রসঙ্গে নির্ভয়া তহবিলের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে বইটিতে। ফলে খুলে পড়েছে মোদী সরকারের মুখোশ। ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’, ‘নমামি গঙ্গে’, ‘প্রধানমন্ত্রী বন্দনা যোজনা’, ‘জল ক্রান্তি অভিযান’ এবং ‘গোশালা নির্মাণ যোজনা’র ক্ষেত্রেও হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছে বইটি। তথ্য বলছে, বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ ব্যয় হয়েছে বিজ্ঞাপনে। তুলনায় কাজ হয়নি বললেই চলে। আসলে যাবতীয় ব্যর্থতা ঢেকে ‘আচ্ছে দিন’-এ নিজের মহিমা প্রচারের উদ্দেশ্যেই ব্যানার-হোডিং তৈরিতে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন মোদী। এমনই অভিযোগ করা হয়েছে ওই বইতে।