কথায় আছে, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’। একবিংশ শতাব্দীতেও আমাদের দেশে মানুষের আগে আসে ধর্ম। কিন্তু সেই ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মানুষের পাশে মানুষ হয়ে দাঁড়ালেন দুই মহিলা। বাণিজ্যনগরীর এক হিন্দু এবং এক মুসলমান মহিলা একে অপরের স্বামীকে দান করলেন কিডনি৷ মানবতার এক অনন্য নজির দেখা গেল বাণিজ্যনগরীতে।
থানের বাসিন্দা নাদিমের চার বছর আগে দেখা দেয় কিডনির সমস্যা। ওষুধপত্রে কাজ না হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। নাদিমের সঙ্গে নাজরিন প্যাটেলের বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে৷ তিন সন্তানও রয়েছে তাঁদের৷ বিহারের রামস্বার্থ যাদবের দু’টি কিডনিই বিকল হয়ে গিয়েছিল৷ অন্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বললে যদি কোনও উপায় মেলে, সেই ভাবনা নিয়ে মুম্বইয়ের সইফি হাসপাতালে আসে দুটি পরিবার৷ কিডনি পরিবর্তন ছাড়া কোনও উপায় নেই বলেই জানিয়ে দেন নেফ্রোলজিস্ট হেমাল শাহ৷
দুই অসুস্থ রোগীদের স্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন চিকিৎসক৷ আর তখনই চিকিৎসক জানতে পারেন নাদিমের স্ত্রী নাজরিনের রক্তের গ্রুপের সঙ্গে অসুস্থ রামস্বার্থের রক্তের গ্রুপ মিলে গিয়েছে৷ কারণ, দু’জনের শরীরে রয়েছে ‘এ’ গ্রুপের রক্ত৷ আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যায় ‘বি’ গ্রুপ হওয়ায় রামস্বার্থের স্ত্রী সত্যদেবীর সঙ্গেও মিলে যায় নাজিমের রক্ত। চিকিৎসক জানতে চান এই দুই মহিলা একে অপরকে কিডনি দিতে রাজি রয়েছেন কী না, নিজেদের স্বামীকে বাঁচাতে চিকিৎসকের প্রস্তাব মেনে নেন দু’জনেই৷
বাবার জন্য কিডনির জোগাড় হয়েছে তাতেই খুশি রামস্বার্থের ছেলে সঞ্জয়। তিনি নাজরিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নাজরিনও স্বামীকে কিডনি দেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন রামস্বার্থের স্ত্রী সত্যবতীকে। সঞ্জয় জানিয়েছেন, “বাবা অসুস্থ থাকাকালীন আত্মীয়রা বাড়িতে আসতেন৷ আর্থিক সাহায্য করতেন তাঁরা৷ তবে কিডনি পাওয়া যায়নি৷ এবার সেই সমস্যা মিটেছে৷ অস্ত্রোপচারের পর চোখের সামনে আর বাবাকে কষ্ট পেতে দেখতে হবে না”।