দেশজুড়ে ভোট ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে প্রচারের ঢাকেও কাঠি পড়ে গেছে। এই প্রচার কাজেই ভোটের সময় গ্রাম গ্রামান্তরে ছুটে বেড়াতে হয় বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীদের। আর খুব স্বাভাবিকভাবেই সে কারণে তাঁদের জন্য নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হয় পুলিশকে। এ ঘটনা কোনও রাজনীতিবিদ বা নেতা-নেত্রীর কাছেই নতুন নয়। কিন্তু এবার তা নিয়েই অভিযোগ তোলার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করলেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
সোমবার জেলায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার সভা করতে আসবেন বলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল বর্ধমান জেলা পুলিশ। রুটিন ব্যারিকেড করতে শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কের দু’পাশে দড়ি ধরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের কাজে নাক গলিয়ে বাবুল পুলিশকে নির্দেশ দেন, ওই দড়ি অবিলম্বে খুলে ফেলতে হবে পুলিশকে। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ বারবার জানান, এটা রুটিন ব্যারিকেড। কিন্তু তা সত্ত্বেও আসানসোলের সাংসদের ‘মামার বাড়ির আবদার’ ওই দড়ি রাখা চলবে না। তিনি এমনও অভিযোগ করেন, অযথাই ব্যস্ত রাস্তায় দড়ি ধরে রেখেছেন পুলিশ কর্মীরা।
জানা গেছে, গাড়ি করে কলকাতা থেকে নিজের কেন্দ্র আসানসোলে যাচ্ছিলেন বাবুল। মাঝে, চা খাওয়ার জন্য তিনি গাড়ি থেকে শক্তিগড়ে নামেন। সেই সময়ই পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান আসানসোলের এই গায়ক-সাংসদ। শুধু তাই নয়, জোর করে নিজে হাতে ওই রুটিন ব্যারিকেডের দড়িও খুলে দেন বাবুল। যা পুলিশ-প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপের সামিল। এ নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘শক্তিগড় এলাকাটি যথেষ্ট দুর্ঘটনাপ্রবণ। সেখানে ভিভিআইপি বা নেতা-নেত্রীরা যাতায়াতের সময় হঠাৎ করে কেউ যাতে নেমে না পড়েন, বা কোনও গাড়ি যাতে এলোমেলো চলাচল না করে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করতেই এই রুটিন ব্যারিকেডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, ভোট ঘোষণা হতেই বাড়াবাড়ি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শক্ত জমিতে তারা যে একটা আঁচড়ও বসাতে পারবে না, তা আগে থেকেই টের পেয়েছে বিজেপির নেতা-নেত্রীরা। তাই শুরু হয়েছে জোরজুলুম আর ভয়ের রাজনীতি। রবিবারই নজরুল মঞ্চের কর্মিসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত বক্সি, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতারা অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপির নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যের ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। আর এবার মোদী-শাহের দলের ‘রত্ন’ বাবুলের ‘দাদাগিরি’র সাক্ষী থাকল গোটা বাংলা।