ভূস্বর্গে নতুন রাজনৈতিক দলের সূচনা করলেন শাহ ফয়জল। এই দলের মূল লক্ষ্য কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান। শাহ ফয়জল এই দলের নাম রাখলেন ‘জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর পিপল’স মুভমেন্ট’। ফয়জলের এই নতুন দলে যোগ দিয়েছেন জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা শেহলা রশিদ, প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ফিরোজ পীরজাদা, বলদেব সিং রায়না-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। ফয়জলের রাজনীতিতে যোগদান ও নতুন দল গড়ার এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিডিপির কাছে বড় ধাক্কা হতে চলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই বিশাল সমর্থন পেতে শুরু করেছেন ফয়জলের এই নতুন রাজনৈতিক দল। ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতির ভোটব্যাঙ্কে ফয়জলের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের প্রভাব পড়বে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। ফয়জলের এই কর্মকাণ্ডের উপর গুরুত্ব দিয়ে নজর রাখছে উপত্যকার মূল স্রোতের সব দলই।
উপত্যকায় নিরন্তর হিংসার প্রতিবাদে সিভিল সার্ভিসের চাকরি থেকে ফয়জল ইস্তফা দিয়েছিলেন জানুয়ারিতে। প্রাক্তন আইএএস অফিসারের এই সভায় কাশ্মীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে তাঁর সমর্থকেরা যোগ দিয়েছেন। রবিবার এই অনুষ্ঠানটি শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ। কিন্তু তা শুরু হয় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে। সোপিয়ান, কুপওয়ারা, বান্দিপোরা ও শ্রীনগর জেলা থেকে বহু মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন ফয়জলের রাজনৈতিক দলের সূচনায়। এই অনুষ্ঠানে ফয়জল বক্তব্য রাখলেন প্রায় ২৪ মিনিট। জানালেন, কেন রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে কত রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে এসব। সামনে আনলেন দলের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’। তাতে সব মিলিয়ে ২৯টি লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে। ফয়জলের দলের প্রথম লক্ষ্য জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান। ফয়জলের জানান, “গত ৭০ বছরে বেহাল দশা ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি। আমাদের উদ্দেশ্য হল রাজ্যকে এক নয়া রাজনৈতিক দিশা দেখানো। আমাদের এই দল কোনও বিশেষ অঞ্চল বা ধর্মের ভিত্তিতে গঠিত হয়নি। আমি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাতে চাই”।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শেহলা রশিদ বলেন, “আইন নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু তা প্রত্যেকের জন্য সমান হতে হবে। আমাদের রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জল চাই। কিন্তু তা দিতে হবে সম্মানের সঙ্গে”। এর সঙ্গে নতুন দলে মহিলাদের যোগদান করার আহ্বান জানিয়েছেন রশিদ। জল্পনা অনুযায়ী, পিডিপি ফয়জলকে চাইছিল কিন্তু ফয়জল নিজেই এই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। রাজনীতি যোগদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই এনসি ও পিডিপির বহু সমর্থক ফয়জলের প্রতি তাঁদের আস্থা দেখাতে শুরু করেছেন। এরকমই একজন হলেন মহম্মদ আফজল। বান্দিপোরার কালুসা গ্রামের এই প্রবীণ মানুষটি ফয়জলের হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে। প্রাক্তন এই আইএএস অফিসার বলছেন, “নতুন চিন্তাভাবনাকে সব সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। আমরা অল্প বয়সিদের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করেছি। আগে যারা সমর্থন করছিল, এখন তারা আরএসএস ও বিজেপির এজেন্ট বলে দোষারোপ করছে। তবে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সসম্মানে প্রত্যাবর্তন ছাড়া আমাদের এই রাজনীতি অসম্পূর্ণ”।