নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোট ঘোষণা হতেই গত সপ্তাহে রাজ্যের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছে তৃণমূল। এবার মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেই বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর নাম ঘোষণার পর প্রথম রবিবারেই নিজের কেন্দ্রে পৌঁছে গেলেন সুব্রত।
তাঁর প্রতি আস্থা রেখেই তাঁকে লোকসভা নির্বাচনের টিকিট দিয়েছে দলনেত্রী। তাই সময় নষ্ট করে বাঁকুড়ায় পৌঁছেই গতকাল থেকে নির্বাচনের কাজ শুরু দিলেন এই বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা। তবে প্রথমদিন প্রচার না করে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক বসেন সুব্রত। গতকাল তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে প্রতিটি ধাপই গুরুত্বপূর্ণ। নেত্রী আমার প্রতি আস্থা রেখেই লোকসভায় প্রার্থী হতে বলেছেন। সেই আস্থার মর্যাদা রাখতেই হবে। বাঁকুড়া আমার পরিচিত এলাকা। পঞ্চায়েতমন্ত্রী হিসাবে এই জেলাতেই সব থেকে বেশি কাজ করেছি। বাঁকুড়ার মানুষ সেই উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন। আশা করছি, দলমত নির্বিশেষে বাঁকুড়ার মানুষের সমর্থন পাব।’
তবে শুধু বৈঠক করেই থেমে থাকেননি তৃণমূলের এই হেভিওয়েট প্রার্থী। আজ সাতসকালেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে টোটোয় চড়ে বেরিয়ে পড়েন বাঁকুড়া শহরে। প্রথমে তিনি মাচানতলা থেকে পায়ে হেঁটে পৌঁছে যান বাঁকুড়া শহরের বড়বাজার এলাকায় অবস্থিত মহামায়া মন্দিরে। সেখানে পুজো দেওয়ার পর তিনি যান বাঁকুড়ার ভৈরবস্থান মন্দিরে। সেখানেও কালীর পুজো দেন সুব্রত। এরপর সময় নষ্ট না করেই সেখান থেকে সটান কলেজ রোডের সিনি গির্জায় হাজির হন তিনি। সেখানেও যীশুর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনা করতে দেখা যায় তাঁকে। সবশেষে বাঁকুড়ার মাচানতলা এলাকার জামা মসজিদে এসে ইমাম মোয়াজ্জেনদের সঙ্গে প্রার্থনা করেন সুব্রত।
এভাবে আজ গোটা সকাল ধরে সবার কাছেই আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন তিনি। শুধু তাই নয়। এভাবে প্রচার শুরুর আগে বাঁকুড়ার মন্দির, চার্চ ও মসজিদে পুজো দিয়ে সম্প্রীতি ও সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তাও তুলে ধরলেন বাঁকুড়ার হেভিওয়েট তৃণমুল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মন্দির, মসজিদ, গির্জা সবকিছু নিয়েই আমরা বড় হয়েছি। নির্বাচনের জন্য নয়, আমরা সবসময় সবধর্মকে সম্মান দিয়ে চলি। আমরা সব ধর্মের পুজারী। আমার পুজোর ঘরে যেমন গঙ্গার জল আছে, তেমনই আছে মক্কার জলও।’ এরপরই বিজেপির উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘ওরা চায়, দেশে শুধু হিন্দু ধর্মই থাকুক, বাকি সব ধর্ম মুছে যাক। তাই ওরা শুধু রাম মন্দিরের দাবি তোলে। কিন্তু আমরা চাই রাম, রহিম আর যীশুর মন্দির। লড়াইটা আসলে সমগ্র মানব জাতির লড়াই।’