অবশেষে পরমাণু চুক্তির ওপর পড়ল শিলমোহর। দু’দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে ভারতে ৬টি পরমাণু চুল্লি বসানোর পরিকল্পনা করে ফেলল আমেরিকা। যে প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা ঘটল তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে যখন উঠে পড়ে লেগেছে বেজিং, তখনই ঘটল এই ঘটনা।
২০০৮ সালে অসামরিক পরমাণু বিষয়ে ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১০ সালে পরমাণু দায়বদ্ধতা আইনের জটে গোটা বিষয়টিই থমকে যায়। ওই আইনে বলা হয়েছিল, কোনও রকম দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় নিয়ে বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ইউরেনিয়াম সরবরাহকারী মার্কিন সংস্থাগুলিকে। এই শর্ত মেনে নিতে রাজি হয়নি আমেরিকা। আইনের পরিবর্তন না হওয়ার কারণে গোটা বিষয়টিই থমকে থাকে গত ছ’বছর ধরে।
দীর্ঘ ছ’বছর ধরে অসমারিক পরমাণু চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল তা কার্যত শেষ হলো বলেই মনে করা হচ্ছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, অসামরিক পরমাণু চুক্তি দু’দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে। ভারতে ছ’টি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করতে চলেছে আমেরিকা।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দায় তিরিশ কোটি মার্কিন ডলার আর চুল্লি যারা চালাবে, তাদের দায় ১৫০০ কোটি টাকা। ভারতে পরমাণু চুল্লি চালানোর সংস্থাটি হল নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (এনপিসিআইএল), যা পরমাণু শক্তি দফতরের অধীনস্থ। ২০১০ সালে প্রণীত আইনে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দায় চাপানোর ব্যাপারে বাছবিচার করা হয়নি। চুল্লি প্রস্তুতকারী সংস্থা যদি ভারতীয়ও হয়, তা হলেও দায়ভার তাদের।তাতে বিদেশি কোম্পানিগুলো দেখে, ভারতীয় আইন তাদের পক্ষে বিপজ্জনক। নতুন পরমাণু চুল্লি তো বটেই, এমনকী পুরনোগুলোর যন্ত্রাংশ বিক্রির ব্যাপারে দেশি এবং বিদেশি কোম্পানিগুলো বেঁকে বসছিল। অবশেষে সমাধান হল সব সমস্যার।