পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। উঠছে দেশপ্রেমের জিগিরও৷ আর এই দেশপ্রেমকে পুঁজি করেই ভোটের আগে নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি নিচ্ছে বিজেপি৷ এতদিন এই অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। এবার নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটপ্রচারে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করার অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল এল রামদাস। তিনি বলেন, পুলওয়ামার জঙ্গী হামলা, বালাকোটে বিমানবাহিনীর বোমাবর্ষণ এবং ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের নাম নির্বাচনী প্রচারে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তাঁর ইঙ্গিত যে বিজেপির দিকেই, তা বুঝতে আর বাকি নেই কারও। একইসঙ্গে অবিলম্বে এই প্রচার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠিও লিখেছেন প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান।
পুলওয়ামা কাণ্ডের পর থেকেই অন্যান্য আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রসঙ্গকে পিছনে ফেলে, তা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের রাজনৈতিক ময়দানের সব থেকে বড় ইস্যু। পুলওয়ামায় জঙ্গী নাশকতা থেকে ভারতীয় বায়ুসেনা, ক্যাপ্টেন অভিনন্দন থেকে রাফাল যুদ্ধবিমান, প্রচারের মঞ্চে তর্কাতীত ভাবে সামনে চলে এসেছে এই বিষয়গুলি। এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বললেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান অ্যাডমিরাল এল রামদাস। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে লেখা খোলা চিঠিতে এই অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর বীরত্বকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার কাজে ব্যবহার করছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এই সংস্কৃতি দেশের সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী।
দু’পাতার ওই চিঠিতে এল রামদাস লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলি যথেচ্ছ ভাবে সেনার ইউনিফর্ম, ছবি ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পোস্টারে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মুখের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের মুখ দেখা যাচ্ছে। দেশের এক জন দায়িত্ববান নাগরিক এবং ভারতীয় সেনার এক জন প্রাক্তন সদস্য হিসেবে এই সব ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ।’ উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই সেনার উর্দি গায়ে চাপিয়ে বিজেপির প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা মনোজ তিওয়ারি। ফলে তা দেখেই যে উদ্বেগে রয়েছেন প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান, এ কথা জলের মতো স্পষ্ট। এই সব ঘটনা সেনাবাহিনীর মানসিক কাঠামোয় প্রভাব ফেলতে পারে বলেও নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন অ্যাডমিরাল এল রামদাস।