ভারত ছাড়ার পর লন্ডনেই আশ্রয় নিয়েছেন পলাতক ব্যবসায়ী নীরব মোদী। সেখানে নতুন করে হীরের ব্যবসাও খুলেছেন তিনি! লন্ডনেরই এক সংবাদপত্র ‘ইউকে ডেইলি টেলিগ্রাফ’-এর তরফে জানান হয়েছে এই খবর।
পরনে গোলাপি শার্ট। তার ওপর চাপানো কালো অস্ট্রিচ হাইড জ্যাকেট। এ হেন জ্যাকেটের দাম ভারতীয় টাকায় ৯ লক্ষের কাছাকাছি। কায়দা করে ছাঁটা গোঁফ, একমুখ দাড়ি, মুখে প্রসন্নতার হাসি। লন্ডনের ওয়েস্ট এন্ড এলাকায় বেশ জাঁকজমকে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন নীরব। তাঁকে দেখে চোখ কপালে উঠেছিল সাংবাদিকদের। এরপর নিমেষের মধ্যেই তাঁর ভিডিও ও ছোটখাটো একটা সাক্ষাৎকার নিয়ে ফেলেন ইউকে ডেইলি টেলিগ্রাফের সাংবাদিকরা। সেই ভিডিও এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ডেইলি টেলিগ্রাফ সূত্রে খবর, সাংবাদিকদের খুব একটা আমল দিতে চাননি নীরব। দু’একটা কথার পরই তিনি ক্যাব ধরে উধাও হয়ে যান। পিছু নেন সাংবাদিকরাও। জানা গেছে, দেশছাড়া হওয়ার পর নীরবের চেহারায় এখন আলাদাই জেল্লা এসেছে। সেটা পুলিশ, গোয়েন্দাদের নাগালের বাইরে যাওয়ার জন্য নাকি লন্ডনের জল হাওয়ায় সেটা স্পষ্ট নয়, তবে বেশ খোশমেজাজেই ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে তাঁকে। ৪৮ বছরের হীরে ব্যবসায়ীর ওজন কিছুটা বেড়েছে। শখ করে গোঁফও রেখেছেন তিনি। এবং ওয়েস্ট এন্ডের সোহো-তে নতুন করে হীরের ব্যবসাও শুরু করেছেন নীরব।
প্রসঙ্গত, সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের দায়ে অভিযুক্ত বিজয় মালিয়া রয়েছেন লন্ডনে। তাঁকে দেশে প্রত্যার্পণ করতে পারবে কি না ভারত সরকার, তার উত্তর লুকিয়ে সময়ের গর্ভে। আর এবার জানা গেল মালিয়ার মতো নীরবও লন্ডনেই আশ্রয় নিয়েছেন। উল্লেখ্য, ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে নীরবের বিরুদ্ধে। গোয়েন্দাদের টনক নড়ার আগেই দেশ ছেড়ে পালান তিনি। তবে বিদেশে বসেই তদন্তে সব রকম সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছিলেন নীরব। কিন্তু কিছুতেই তাঁকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি।
আইনজীবী মারফৎ ইডি-কে চিঠি নিয়ে নীরব জানিয়েছিলেন, দেশে নাকি তাঁকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছে। এমনকি এখনও পর্যন্ত যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁদের পরিবার, ঋণদাতা এবং যে সকল গ্রাহকের গয়নাগাটি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি, তাঁদের তরফেও হুমকি পেয়েছেন তিনি। নীরবের মার্কিন নাগরিক স্ত্রী অ্যামি মোদী, বেলজিয়ামের নাগরিক নীরবের ভাই নিসাল মোদীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে সিবিআই। অন্যদিকে, পিএনবি জালিয়াতি মামলায় নীরবের পাশাপাশি অভিযুক্ত তাঁর মামা মেহুল চোকসিও। তাঁর নামেও হয়েছে এফআইআর। কিন্তু ধরা পড়বার আগে তিনিও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। মেহুল এখন অ্যান্টিগুয়ার নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানেই থাকতে শুরু করেছেন।