শিলান্যাসের ফলকে নাম নেই কেন? দুই বিজেপি নেতা এই নিয়েই প্রথমে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। সেখানেই না থেমে ওই বিজেপি নেতা অন্যজনকে নিজের জুতো খুলে ঠেঙাতে আরম্ভ করেন। আর এসবই ঘটে প্রকাশ্য সভায় সংবাদ মাধ্যমের সামনে। সমগ্র ঘটনার রেকর্ডও হয়েছে ক্যামেরায়। এমনকী রেকর্ড হয়েছে দুই জনপ্রতিনিধির মুখ থেকে বেরিয়ে আসা গালাগালিও।
বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে দেশের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে। আর বিজেপির এই দুই ‘কীর্তিমান’ নেতা হলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ শরদ ত্রিপাঠী এবং কবিরনগরের বিধায়ক রাকেশ বাগেল। কবিরনগর জেলায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের জেলা সমন্বয় কমিটির বৈঠক ছিল। কয়েক দিন আগেই ওই এলাকায় একটি প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। কিন্তু সেই শিলান্যাসের ফলকে বিধায়ক রাকেশ বাগেলের নাম থাকলেও সাংসদ শরদ ত্রিপাঠীর নাম রাখা হয়নি। কেন ফলকে তাঁর নাম রাখা হয়নি, এ নিয়ে বৈঠকে বিধায়ককে প্রশ্ন করেন সাংসদ। বিধায়কের উত্তর ছিল, তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রে যাবতীয় সরকারি প্রকল্পের দায়-দায়িত্ব তাঁর নিজের উপর। তাই তাঁর নাম রাখা হয়েছে। এতেই চটে যান সাংসদ। আরও উত্তেজিত হয়ে নির্দেশ দেন, ওই নাম ফলকে তাঁর নামও ঢোকাতে হবে। তখন বিধায়ক জানান, এক বার নামফলক তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন আর তাতে অন্য কারও নাম ঢোকানো সম্ভব নয়। এতেই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাংসদ। ভরা বৈঠকের মধ্যেই পা থেকে জুতো খুলে বিধায়ককে পেটাতে শুরু করেন। তার সঙ্গে চলতে থাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি।

সাংসদ ও বিধায়কের এই ‘মল্লযুদ্ধ’ থামাতে কিছুক্ষণের মধ্যেই ছুটে আসেন পুলিশ কর্মীরা। বিধায়ক কিছুটা শান্ত হলেও সাংসদ তখনও অগ্নিশর্মা। অবস্থা এমনই যে, পারলে পুলিশের ঘেরাটোপ সরিয়ে ফের গিয়ে বিধায়কের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ কর্মীরা তাঁকে বাইরে নিয়ে যান। ভেস্তে যায় বৈঠক।

এই ঘটনার পরেই বিধায়ক রাকেশ সিং বাঘেলের অনুগামীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সাংসদ শারদ ত্রিপাঠীর গ্রেফতারের দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ওই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় গোটা দেশে। নিন্দার ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনায় বিজেপির অর্ন্তকলহই প্রকাশ হয়ে গেল।